রিপন শান, লালমোহন ॥ দ্বীপজেলার ভোলার মধ্যমনি লালমোহন উপজেলার আর্থসামাজিক অবকাঠামোর উন্নয়নে কালজয়ী বিপ্লব ঘটিয়ে লালমোহন-তজুমদ্দিনের আপামর মানুষের প্রাণের নেতায় পরিণত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য, লালমোহন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, রিহ্যাব এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ভোলা ৩ আসনের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য আলহাজ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
লালমোহন-তজুমদ্দিনে ৪টি কলেজ ও বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। সংসদীয় আসনের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এর আলো পৌছে দিয়েছেন । তার কল্যাণে বর্তমানে লালমোহন তজুমদ্দিনের সিংহভাগ মুক্তিযোদ্ধা সরকারপ্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। লালমোহনে কর্মরত স্থানীয় ও জাতীয় পত্র-পত্রিকার সাংবাদিকদের মাঝে তিনি নানামুখী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আগামী দিনে যাতে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পথ বেগবান থাকে সে জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
লালমোহন প্রেসক্লাবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও আজীবন সদস্য হিসেবে তিনি সদস্যদের মতামত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রীয় কার্যকরী কমিটিকে ফলপ্রসু করার জন্য ১৭ সদস্য বিশিষ্ট লালমোহন প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি উপহার দিয়েছেন। লালমোহন প্রেসক্লাব যাতে একটি স্থায়ী ভবনে তাদের সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সে লক্ষ্যে তিনি খুব শিঘ্রই লালমোহন প্রেসক্লাবের জন্য স্থায়ী কার্যালয় উপহার দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
লালমোহনের অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠন বিশেষ করে লালমোহন রিপোর্টাস ইউনিটি ও লালমোহন মিডিয়া ক্লাবেরও তিনি প্রধান পৃষ্টপোষক।
লালমোহনের বিলুপ্ত প্রায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নতুনভাবে তুলে ধরার জন্য তিনি সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন বিশেষ করে গীতিচয়ন শিল্পীগোষ্ঠী, রোদসী কৃষ্টি সংসার, তোলপাড় কৃষ্টি সংসার এবং অঙ্গীকার নাট্যমীর কমিটেড সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে গঠন করেছেন লালমোহন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী। গত ১ বছর ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামছুল আরিফের নেতৃত্বে এই একাডেমী লালমোহনে এনেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন দিনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব।
সম্প্রতি লালমোহন সরকারী শাহবাজপুর কলেজ সংলগ্ন এমপি মহোদয়ের নিজস্ব বাস ভবনে এক সৌজন্য আলাপচারিতায় আলহাজ্ব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি বলেন, লালমোহন তথা ভোলা জেলার শিক্ষাবান্ধব যে কোন সংগঠনে আমি সবসময় তাদের আপনজন হিসাবে পাশে থাকি এবং থাকতে চাই। যেমন আছি লালমোহন ফাউন্ডেশন ঢাকায়, লালমোহন থানার ছাত্র-ছাত্রী কল্যাণ সমিতি, তজুমদ্দিন থানার ছাত্র-ছাত্রী কল্যাণ সমিতি, ভোলা সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠনে।
তিনি বলেন, প্রিয় জন্মভূমি লালমোহনকে শতভাগ শিক্ষার আলোয় আলোকিত করবোই ইনশাআল্লাহ। ২০১০ সালের ২৪ এপ্রিল লালমোহন তজুমদ্দিনবাসী আমাকে বিপুল ভোটে এলাকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করার পর থেকে আমি লালমোহন তজুমদ্দিন উভয় উপজেলায় শিক্ষার গুনগত মান ও পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যে ৪টি কলেজ সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি।
লালমোহন উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের অধিনে ৪৭টি বিদ্যালয় পুন:নির্মাণ করা হয়েছে। ৪টি বড় প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে। তজুমদ্দিনে নির্মাণ করা হয়েছে ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বেশ কয়েকটি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৩০টি আনন্দ স্কুল প্রতিষ্ঠা করে ঝরে পরা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। আমি এমপি হওয়ার পরপরই ধলীগৌরনগর কলেজকে এমপিওভূক্ত করে সেখানে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ করে দিয়েছি। লালমোহন সরকারি শাহবাজপুর কলেজে ৪টি বিষয়ের অনার্স কোর্স চালুর চেষ্টা করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স কোর্স চালু করেছি ।
এছাড়া ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আমার প্রচেষ্টায় এমপিওভূক্ত হয়েছে। বদরপুরের মত দূর্গম এলাকায় আমার নিজ নামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করে লালমোহন বোরহানউদ্দিন দুই উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন দেউলা সাচড়া, কালমা, বদরপুরের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের কলেজ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ করে দিয়েছি।
লালমোহন কলেজ মাঠে দৃষ্টিনন্দন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করেছি যাতে এ এলাকার শিক্ষা সংস্কৃতি সামাজিক কার্যক্রম মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার চেতনার আলোকে পরিচালিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয় এর নামে বাংলাদেশে এই প্রথম একটি বিশাল বাজেটে শাহবাজপুর কলেজ মাঠে অত্যাধুনিক পার্ক এবং ফোয়ারা নির্মাণ করেছি। এটি রাজধানী ঢাকা আর বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের পরেই চমক হিসেবে পর্যটকদের কাছে পরিচিত হবে। এই স্থাপনায় সংযুক্ত রয়েছে ডিজিটাল এলইডি স্ক্রীনের সুবিশাল মনিটর, যার মাধ্যমে এ এলাকাবাসী রাষ্ট্রীয় নানান কার্যক্রম এবং বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানমালা সরাসরি উপভোগ করতে পারছে।
এমপি শাওন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের নানা অপশাসন ও দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, লালমোহন তজুমদ্দিনের শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা ও ক্রীড়াঙ্গনের কল্যাণে আমি নিজেকে আজীবন নিবেদিত রাখব এবং লালমোহনকে সব দিক থেকে দেশের সর্বাধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ মডেল উপজেলায় পরিণত করবো।