বিডি মেট্রোনিউজ ॥ জনপ্রিয় কমেডি প্রোগ্রাম ‘মার্সেল হা-শো’তে প্রথম স্থান অধিকার করে চমক তৈরি করেছেন হৃদয় আল মীরু। শনিবার রাতে কমেডির ফাইনাল লড়াইয়ে তার বিজয় নিশ্চিত হয়।
বিজয়ী হওয়ার পরই এনটিভির ‘মার্সেল হা-শো’ সেরা পুরস্কার বিজয়ী মীরু তার ফেসবুক স্টাটাসে বলেন, ‘এই জীবনে আমি এই অল্প সময়ে এত বড় একটা সম্মান পাব যা কোনদিন ভাবিনি। ধন্যবাদ জানাই এনটিভি’কে। এই প্লাটফর্মটা না থাকলে হয়তো আমরা মানুষের এতো কাছে আসতে পারতাম না। শেষ হয়ে গেল মার্সেল হা-শো। মিস করবো, খুব খুব মিস করবো পুরো পরিবারকে। আমরা আবারো কোন একদিন একসাথে কাজ করবই, যদি লেগে থাকি।’
বাবা মো. কিবার আলী প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার লক্ষ্মিমারা গ্রামের অতি সাধারণ পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা। পিতামাতার ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি পঞ্চম। ছোটবেলা থেকেই মীরু ছিলেন চঞ্চল ও হাস্যজ্জল স্বভাবের। সবসময় মুখে যেন এক ঝলক হাসি লেগেই থাকত। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধুদের মধ্যে কারো মন খারাপ দেখতে পেলে তার কাছে গিয়ে হাসিমাখা মুখে কৌতুকের ভনিতায় সব দুঃখ দূর করার চেষ্টা করতেন মীরু।
বর্তমানে মীরু নিজের এলাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কমেডিয়ান হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় তিনি। অডিশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে প্রথম থেকেই বাংলাদেশের বহুল আলোচিত এনটিভির পর্দায় মার্সেল ‘হা-শো’ সিজনে এ বছরের জুলাই মাস থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আসছিলেন।
ইতিমধ্যেই অভিনেতা ডা. এজাজ, গাজী মুজহারুল ইসলাম, সাজু রাজেনসহ সবার মন জয় করে দেশের বাইরেও অভিনয়ে যথেষ্ট পরিচিত হয়ে উঠেছেন মীরু।
মীরু বাড়ির পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করার পরে ভর্তি হন শিমুলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে নীলফামারি সরকারি কলেজে আসেন। ২০১০-১১ সেশন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন মতিহারের সবুজ চত্বরে। শুরু হলো স্বপ্ন পূরণের যাত্রা। পড়ালেখার পাশাপাশি অভিনয়, গান ও আড্ডাবাজিতে মেতে থাকতেন সবসময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় অভিনয় করার কারণে অতি অল্প সময়ে ক্যাম্পাসে পরিচিত মুখ হয়ে উঠে মীরু।
নীলফামারি, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিনয় করে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন তিনি।
মীরু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেও অভিনয় করতেন মীরু। যেখানে অনুষ্ঠান হয়েছে সেখানেই হাজির হয়ে স্টেজ মাতিয়েছেন তিনি। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বিখ্যাত নায়িকা নিপুন, লাক্স সুপারস্টার বাঁধন, নাট্য অভিনেতা আব্দুল কাদের, তুষারসহ জনপ্রিয় এ অভিনেতাদের মুখে সর্বদা নিজের অভিনয়ের ভুয়সি প্রসংসা পেয়েছেন। তাঁদের মিষ্টি মাখা উপদেশ শুনে নিজের ঝুলি সমৃদ্ধ করেন।
হৃদয় আল মীরু বলেন, ছোট থেকেই আমি অনেকটা হাস্যরস প্রকৃতির ছিলাম। বন্ধুদের সবসময় আনন্দ দিতে মজা পেতাম। মূলত বন্ধুদের উৎসাহ পেয়ে এতো দূরে আসা। নিত্যদিন তাদের নিয়ে যে আনন্দ করি সেটাকে আমি কৌতুক বানিয়ে ফেলি।
তিনি আরো বলেন, কখনো এ ব্যাপারে হতাশা কাজ করলে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের শিক্ষার্থী আবু হেনা রনি ভাইয়ের কাছ থেকে। তিনি আমাকে সার্বিকভাবে সহায়তা করেছেন। তবে তার শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছে রাজশাহী ও রংপুর কমেডি ক্লাব।