–
————————————–
আঙুল আর আগুনের আয়তন
—————————————-
গ্রামগুলো পোষে প্রজাপতি আর নানা বর্ণের ছায়া
একটা বৃক্ষ এসে সেই ছায়ায় রেখে যায় প্রজ্ঞার
লালছাপ। মানুষ ছাপ দেখে , ছায়া দেখে । শিখে
ছাপার কৌশল। বনেদি বৃত্ত ভেঙ্গে বের হবে বলে,
প্রজন্মও বাড়ায় হাত। আমি হাত ধরি। দেখি আঙুল
আর আগুনের আয়তনের মাঝখানে পড়ে আছে প্রাচীন
মমতার মমি। মায়াকাজল পরা এক কিশোরীর শৈশব।
চালিত ছাপাখানার মতো মুদ্রিত হতে হতে উত্তাপও
সমৃদ্ধ হয়। বাড়ে প্রত্যয় । আরো কাছে যাবে বলে
মানুষ শহর ছেড়ে ছুটে গ্রামের দিকে। আগুনের
আঙুল চিনে পথের জ্যোতি পাবার মুগ্ধ পরিসরে।
————————-
ধাতুসূর্যের কণা
————————-
ছায়াদের সাথী হয়ে প্রদক্ষিণ করি জলের নগর। বিন্দু আর
বৈশাখ মিলে যে ভূগোল দ্বৈত স্রোত লিখে যায়, সেই অক্ষরগুলো
পড়ে নিতে আবার নদীর দিকে তাকাই। নৌকো ভাসে, ভাসে
পরিণত স্বপ্নের খামার। দ্বীপ হয়ে জাগে দুপুর আর বনজ বাঁশির
নিয়ম। পথের ছবিতে জেগে থাকে মানুষের মুখ।
মানুষ এর আগেও বিরাগী ছিল। বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে এর
আগেও কতোবার করেছে অনশন। কতো সুতো ছিঁড়ে
উড়িয়েছে আকাশে পালিত ঘুড়ির মেলা। হলুদ আর নীলের
নিয়ম। সবকিছু উড়িয়ে দিয়ে তারপর একসময় নিজেও
ধাতুসূর্যের কণা হয়ে মিশেছে মাটিতে। ঝলমলে সৌর
বিহারে অন্য কোনো মানুষের জন্যই রেখেছে নিগুঢ় প্রত্যয়।
——————–
পথ ও প্লাবন
——————–
আমাদের প্লাবন গুলো বার বার ই পথে ভেসে যায়। ডুবে না
কিছুই। ভেসে যাওয়া খড়কুটো আঁকড়ে ধরে বাঁচার শেষ চেষ্টা
করে বসতঘেরা মানুষের দল। যারা প্রতিপত্তির খোঁজে আজীবন
নিমগ্ন থাকে, তারাও অন্বেষণ করে জলের সর্বশেষ অগ্নিপর্ব।
আগুন মানুষকে দিতে পারে অনেক কিছুই। মানুষ আগুনকে
অবারিত জলধারা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না। স্মৃতিগুলো
জলে ভাসিয়ে দিয়ে বর্ষার উৎসবে খোঁজে মনের উত্তাপ। পথ
তখন পাঁজরের খুব কাছে, আশ্রয় চায়। একটি পাখি প্লাবনে
ভেসে যেতে যেতে উঁকিঝুকি মারে।
———————
একক জলতন্দ্রা
———————
উৎসের আগুন বুকে নদীরাও প্রবাহিত হয়। মানুষের জন্য
রেখে যায় একক জলতন্দ্রা। সেই ঘোর বুকে নিয়ে আমাদের
আকাশে জ্বলে পাখির প্রদীপ। আলোকিত হতে হতে নিজস্ব
নিয়মে,গড়ি উপনিবেশ- বাধ্যতার চাষতন্ত্র বোধ। কখনও
পূর্বপুরুষের ছায়া সাথে নিয়ে কুড়াই রৌদ্রকণা। রেখে যাবো
জমিনের শোভিত ফসলে। ভাদ্র কিংবা অগ্রহায়নের আরেকটি
দোয়েল এসে গাইবে গান। আর যা পারিনি তুলে নিতে দ্বৈত
সঞ্চয়ে ,তার ও কিছু উচ্ছল প্রান্তর। ছুঁবে কোনো অনাগত কবি,
সাগরের জলসমগ্রে খুঁজে ঢেউলীলা ; কবিতার ডানার প্রহর।