কমবয়েসি বর খুঁজছেন রাইমা। বিয়ের ক্ষেত্রে বরকে যে শুধু তার স্ত্রীর চেয়ে বড় হতে হবে তা ঠিক নয় বলেই মনে করেন ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় ও আবেদনময়ী অভিনেত্রী রাইমা সেন।
আনন্দবাজার পত্রিকায় বুধবার এক সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে রাইমার। ওই সাক্ষাৎকারেই এসব বিষয়ের বাইরেও নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।
রাইমা সেনের সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত:
আজকে কিন্তু আমি একটাই ব্যাপার শুনতে এসেছি। রাইমা সেন নাকি ‘সিঙ্গল’ আবার?
(হাসি) তা হলে তো আর ইন্টারভিউ করে লাভ নেই। একটা প্রশ্নতেই ইন্টারভিউ শেষ। ইয়েস আই অ্যাম সিঙ্গল।
যেহেতু আপনি তাই জিজ্ঞেস করতে হচ্ছে, এটা নাকি মিথ্যে। আসলে আপনি সিঙ্গল নন, পুরোটাই বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে দশ দিনের ঝগড়ার রেশে বলছেন?
না, না, কোনও ঝগড়া নেই। এক শহরেই থাকি না তো কীসের ঝগড়া…
লাভার্স টিফ নয়?
একদম নয়। আমি সিঙ্গল।
রাইমা সেন তো প্রায় উধাও। প্রচুর লোকের ফোনও তোলেন না আপনি…
ডিটক্স করছি। রোজ সুইমিংয়ে যাচ্ছি।
কোথায় করছেন সুইমিং?
টলি ক্লাবে। স্যাটার্ডে ক্লাবে। ফুল ডিটক্স। আপনার মুখ দেখে মনে হচ্ছে আপনি খুব একটা বিশ্বাস করছেন না।
একদম করছি না। আর এই পার্টি সিজনে আপনি ডিটক্স করছেন, কে বিশ্বাস করবে বলুন!
যা পার্টি করি, এই সময়টা ডিটক্স করাই ভাল। সেটা করে লাভ হচ্ছে। মাই স্কিন ইজ গ্লোয়িং…
এটা কি সিঙ্গল থাকার গ্লো?
তা জানি না। তবে আমার নিজেকে দেখতে বেটার লাগছে। জেনারেলি কেরিয়ার নিয়েও আমি খুশি। দু’টো হিন্দি ছবি রিলিজ হচ্ছে এ বছর। ‘ত্রিদেব’ আর ‘বলিউড ডায়ারিজ’। সেটার কাজে কালকে মুম্বই যাচ্ছি। তবে শুক্রবার ফিরে আসব ‘বাস্তু-শাপ’য়ের প্রিমিয়ারে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে কিন্তু ‘বাস্তু-শাপ’ আপনার জীবনের সেরা পারফর্ম্যান্স।
(হাসি) হ্যাঁ, আমাকে জীবনের বেস্ট রোলটা দিয়েছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ‘বাস্তু-শাপ’য়ে। এমনিতে ওর ছবিতে আমি সব সময় ভাল রোলই পেয়েছি। কিন্তু এত ম্যাচিওর্ড রোল কোনও দিন করিনি। সেটা আপনারা ছবি দেখলেই বুঝতে পারবেন। একে আমি, আবীর আর পরম। সঙ্গে কৌশিক আর চূর্ণীর মতো অ্যাক্টররা। ‘বাস্তু-শাপ’ সম্পর্কে আমি খুব পজিটিভ।
আর এই যে সাঁতারে যাচ্ছি টলিতে কী স্যাটারডেতে, সেখানেও লোকে ‘বাস্তু-শাপ’য়ের কথা বলছে। আমার কোনও ছবিতে এ রকম হয়নি কিন্তু। তবে প্রিমিয়ারে মাম্মি-ড্যাডিকে নিয়ে যাব কি না, ভাবছি…
কেন? কেন নিয়ে যাবেন না?
আরে, ছবিতে আমার আর পরমের একটা বিরাট কিসিং সিন আছে। প্রায় এক মিনিট। সেটার জন্যই ভাবছি… (হাসি)
বুঝলাম, কিন্তু এটা তো প্রথম বার চুমু খাচ্ছেন না আপনি পরমকে?
না তা নয়। কিন্তু হ্যাভ নেভার কিসড হিম ফর সো লং…
আর সেটা দেখে ছবির অন্য হিরো, আবীরের কী রিঅ্যাকশন ছিল?
আবীর নাকি সে দিন পুরো ছবিটা দেখেছে। বেরিয়ে আমাকে বলল, ‘‘রাইমা, এর পর থেকে আমার ছবিতে চুমু নিয়ে প্লিজ আর ন্যাকামো করিস না তুই’’…
আর কী বললেন?
আর বলল, ‘‘কী দরকার ছিল পরমকে এতক্ষণ ধরে চুমু খাওয়ার।’’
আপনি যখন পরমকে চুমু খাচ্ছেন ‘বাস্তু-শাপ’-এর সেট-এ, আবীর তখন কোথায় ছিলেন?
আবীর ছিল তো, মনিটরে বসে দেখছিল। সেদিন মজা করল আমাদের সঙ্গে কিন্তু স্ক্রিনে দেখে ও রকম করে ন্যাকামো করিস না বলল। শ্যুটিংয়ের দিন কী বলেছিল?
সে দিন পাহাড়ে ‘বাস্তু-শাপ’য়ের সেট-এ পরমকে বলেছিল, ‘‘ওরে, এবার শেষ কর তোরা চুমু খাওয়া। আমরা তা হলে সবাই একটু লাঞ্চ ব্রেক পাই।’’
সেটা ঠিক। ওই ডিটক্সের কথা যে বললেন, লোকে তো বলছে অন্য কথা!
কী বলছে?
আসল খবর, আপনার ব্রেক আপ হয়েছে?
(চুপ) না, ব্রেক আপ হয়নি। দেয়ার হ্যাজ বিন নো ব্রেক আপ। আমরা আজকেও ভাল বন্ধু। উই আর স্টিল ফ্রেন্ডস। ব্যস, এটুকুই বলব।
এন্টারটেইনমেন্ট জার্নালিজমে ১৯৩০ থেকে এই উত্তরটা সবচেয়ে ক্লিশে, সেটা জানেন তো?
(হাসি) আরে, ব্রেক আপ সত্যি হয়নি। ডিটক্স চলছে। চুপচাপ আছি। হেলদি খাবার খাচ্ছি। অযথা পার্টি করছি না…
সন্নাসিনী হয়ে গেলেন নাকি?
না, এখনও হইনি। তবে ব্রেক আপ নয়। ওর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি…
শেষ যখন আপনার ইন্টারভিউ করেছিলাম, তখন বলেছিলেন আর তিন দিনে ওঁর ডিভোর্সটা হয়ে যাবে।
হ্যাঁ, কিন্তু ডিভোর্সটা এখনও হয়নি।
সেই ইন্টারভিউয়ের পর কিন্তু আট মাস কেটে গিয়েছে রাইমা…
জানি। ডিভোর্সটা অনেক দিন ধরেই পেন্ডিং। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে বলে আমার ধারণা।
এটাও শুনেছিলাম ডিভোর্স হচ্ছে না বলে আপনার মা মুনমুন সেন যথেষ্ট চিন্তায় ছিলেন…
হ্যাঁ, একটু চিন্তায় ছিল মা কিন্তু…
চিন্তা তো কাটেনি।
হ্যাঁ, চিন্তা কাটেনি। কিন্তু আমি জানি ডিভোর্সটা হয়ে যাবে।
আপনি যে বললেন, আপনি সিঙ্গল। এটায় তো আপনার অ্যাডমায়ারারের দল খুব খুশি হবে।
তাদেরকে জানাব বলেই তো বললাম। তাদের মধ্যে যারা এই ইন্টারভিউটা পড়বেন, তাদের বলছি আমি সিঙ্গল।
সৃজিতকে নিয়ে গসিপ?
কোনও গসিপ আছে নাকি সৃজিতের?
আপনি কোন জগতে থাকছেন যে সৃজিতকে নিয়ে কোনও গসিপ শুনছেন না?
সত্যি, আমি জানি না। সৃজিত কেন, পরমকে নিয়েও কোনও গসিপ কানে আসেনি রিসেন্টলি। এই তো ইকার সঙ্গে সে দিন দেখা হল। হোয়্যার ইজ দ্য গসিপ? তবে পরমের সঙ্গে ‘বাস্তু-শাপ’য়ের পর আর একটা ছবি করছি।
মায়ামিতে শ্যুটিং, সুমন ঘোষ পরিচালক?
ইয়েস, সুমনের ছবিটা। আই অ্যাম ভেরি কিকড অ্যাবাউট দ্য ফিল্ম। দারুণ গল্প। মায়ামিতে গেলে কিছু গসিপ শুনতে পারবেন বোধ হয়। (হাসি) এই যে বললেন আপনি সিঙ্গল। যদি সিঙ্গল হন, তা হলে এ বছর কি বিয়ে করছেন? আমি আর বিয়ের ব্যাপারে শিওর নই…
শেষ ইন্টারভিউয়ের সময় তো খুব শিওর ছিলেন।
আর নই।
মানে, যে বয়ফ্রেন্ডের ডিভোর্স হয়নি এখনও, তার সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারে সিওর নন, নাকি জেনারেলি?
জেনারেলি আমি শিওর নই।
বাট ইউ আর নট গেটিং ইয়াংগার।
হ্যাঁ, কিন্তু বিয়েটা তো সলিউশন নয় সব কিছুর। বিয়ে ছাড়াও আমার জীবনটা ফ্যাবুলাস। আমি আর কোনও ব্যাগেজ চাই না।
রাইমা, ৩৬ বছর বয়সে ব্যাগেজ ছাড়া ক’জন বয়ফ্রেন্ড পাবেন আপনি?
হ্যাঁ, জানি ব্যাপারটা ডিফিকাল্ট। ওর হয়তো ডিভোর্স হয়েছিল, তবে ও কিন্তু আমার থেকে বয়সেও ছোট। সুতরাং শুধু বয়সে বড় হতে হবে আমার বরকে — এমন কথা কে বলল? বয়সে ছোট হলেও চলবে…
বিয়ে করলে মুনদি তো খুশি হবেন?
মা লিবারল। বাবা-ও। বিয়ে করিনি বলে ওরা হয়তো চিন্তায় আছে। কিন্তু রাতের ঘুম হচ্ছে না, তা নয়। ওরা পারলে রিয়াকেও বিয়ে করত বলে কিন্তু যেহেতু আমি বড়, তাই চায় যাতে আমার বিয়েটা আগে হোক। আর এখন তো আমি সিঙ্গল। আপনার এডিটর কি এটাই হেডলাইন করবেন?
সে তো এডিটর জানেন।
প্লিজ, এটাই করবেন, ‘আই অ্যাম সিঙ্গল’।