মেট্রো নিউজ : ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন বাংলাদেশের ব্লগার আব্দুল্লাহ আল তারেক। হত্যার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে দিল্লিতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংক্রান্ত মিশন প্রধানের কাছে তিনি এ আবেদন জানান।
ঝালকাঠির সুবিদপুর গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল বারির পুত্র আব্দুল্লাহ আল তারেক বর্তমানে কলকাতার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা তারেক বরিশালের সরকারি ফজলুল হক কলেজে কর্মরত অবস্থায় গত বছর মৌলবাদীদের হাতে আক্রান্ত হন। হুমকির প্রেক্ষাপটে তিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যান।
কলকাতার মানাবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সেক্রেটারি কিরিটি রয় গত ১৪ই অক্টোবর ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বরাবর এক চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে তিনি বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তা ধারার অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের নিরাপত্তা দিতে বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশে গত দুই বছরে চার জন ব্লগার খুন হয়েছেন। কিন্তু তাদের খুনের কোন কুলকিনারা হয়নি।
মাসুমের পক্ষ থেকে তারেককে যেন জোর করে ভারত থেকে বিতাড়িত করা না হয় সেই আবেদন জানানোর পাশাপাশি তাকে আশ্রয় দিতে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধানের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। ভিওএনিউজ
মাসুম জানান, বাংলাদেশের বিসিএস-এডুকেশন ক্যাডারের অফিসার তারেক বরিশালের সরকারি ফজলুল হক কলেজে কর্মরত অবস্তায় গত বছর উগ্রপন্থীদের হাতে আক্রান্ত হন। ঘটনাটি শিক্ষামন্ত্রীকে জানালে তিনি তারেককে বরিশাল মহিলা কলেজে বদলির ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সেখানেও তারেককে উগ্রপন্থীরা নিয়মিত অনুসরণ করতে থাকে।
গত ৩১ জুলাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নাম করে তাকে ফোনে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। এই অবস্থায় তারেক বৈধ ভিসা নিয়ে এবং কলেজে ছুটি নিয়ে ভারতে চলে এসেছিল কিন্তু ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি না মেলায় তারেককে বাংলাদেশে ফিরে যেতে হয়। কিন্তু সেখানে ফিরে যাওয়ার পর ফের তার উপর উগ্রপন্থীদের নজরদারি চলতে থাকে। আতঙ্কিত তারেক ফের ভারতে চলে যান।
পথে অবশ্য বারে বারে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাইতে হয়েছে। কিন্তু ভিসার জন্য নতুন করে আবেদন করার সুযোগ না থাকায় সে গোপনে ভারতে আসতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত মাসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে বর্তমানে তাদের আশ্রয়ে রয়েছেন তারেক।
বাংলাদেশে যে কজন ব্লগার ইতিমধ্যে খুন হয়েছেন এদের প্রত্যেকের সঙ্গে তারেকের ঘনিষ্টতা ছিল। গত আগস্টে নিহত ব্লগার নীল নীলয়-এর সঙ্গে মৃত্যুর আগেও কথা হয়েছিল ব্লগারদের নিরাপত্তার সঙ্কট নিয়ে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে চার নাস্তিক ব্লগার খুন হওয়ার পর সমমনা অনেক ব্লগার বাংলাদেশ ছেড়ে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।