বাইক চালিয়ে প্যারিস থেকে ঢাকায়

বিডি মেট্রোনিউজ ফ্রান্সের নারী পর্যটক ম্যালুসিন মালেন্দার বিশেষ অনুমতি নিয়ে তাঁর ৮০০ সিসির মোটরবাইকটি চালিয়ে প্যারিস থেকে ঢাকায় এসেছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, ঘুরবেন এবং ঘুরেছেন বিশ্বের অনেক দেশ। মালেন্দারের বাইক ও হেলমেটের বিভিন্ন জায়গায় ভিডিও ক্যামেরা বসানো। তিনি বাইক চালিয়ে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের নারীদের ওপর ভিডিও ডকুমেন্টারি করছেন।

ম্যালুসিন মালেন্দার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলবেন অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের সঙ্গে। যাবেন সুন্দরবনে।

শনিবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে তিনি যান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে দিনভর পাখি দেখে কাটান তিনি।

জাহাঙ্গীরনগরে গিয়ে পাখি দেখার এই আয়োজনের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ উইমেন রাইডার্স ক্লাব। ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ও ওয়েব ডেভেলপার ইসরাত খান মজলিশ, এনজিওতে কর্মরত অ্যানি রডরিক, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ফাহমিদা আবদীন, তামান্না বেগম ও মাহিনুর আক্তার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী তানজিলা হাসান মালেন্দারকে নিয়ে রওনা হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখে।

সাত নারীর একসঙ্গে মোটরবাইক চালানোর দৃশ্য মনোযোগ কাড়ে পথচারীদের।

ইসরাত খান মজলিশ জানান, ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা তাঁদের ক্লাবের সদস্যের সংখ্যা ৫০। এর বাইরে ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমেও ক্লাবের সঙ্গে অনেকে সংহতি প্রকাশ করেছেন। ঢাকার বাইরেও আছেন কয়েকজন।

পাখি দেখার জন্য যাত্রা শুরুর আগে মালেন্দারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয় জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়। তাঁর মোটরবাইকের পেছনে কয়েকটি বক্স, সেখানেই থাকে তাঁর নিত্যব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসপত্র। চালানোর ফাঁকে ফাঁকে চলে ভিডিও ধারণের কাজ। নিজের কথাও সেখানে ভিডিও করেন। ট্রায়াম টাইগার ৮০০ এক্সসিএ ব্র্যান্ডের এই মোটরবাইক নিয়ে পাহাড়ি রাস্তাসহ সব ধরনের রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ান তিনি।

এ পর্যন্ত প্রায় ২৫টি দেশ ঘুরেছেন। এবারের সফরে বাংলাদেশ থেকে নেপাল, পাকিস্তান, ইরান হয়ে দেশে ফিরবেন। মালেন্দারের মোটরবাইকে লাগানো আছে বিশ্বের মানচিত্র। লেখা আছে ‘রোডস ফর ফ্রিডম’। ২০১৫-১৬ সময়কালে তিনি কোন কোন দেশে গিয়েছেন এবং যাবেন, সেসবেরও নাম লেখা আছে।

সংসদ ভবনের সামনে মালেন্দার পৌঁছানোর পর লোকজনের ভিড় জমে যায় তাঁকে ঘিরে। তাঁর সঙ্গে ইসরাত খানের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়।

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে আসা মালেন্দার আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ছেড়ে যাবেন। এখনো সংসারের জালে আবদ্ধ না হওয়া মালেন্দার হাসিমুখেই বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুব বন্ধুবৎসল। কক্সবাজার ঘুরে এসেছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করেছেন। এ দেশের রূপ দেখে তিনি মুগ্ধ।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts