শিউল মনজুর ॥ শীতের আমেজ শেষ হতে চলেছে। দূরের অরণ্যে পখিরা গেয়ে উঠছে গান। চারিপাশের বাতাসে আমের বোলের মিষ্টি সুবাস ও নানা বৃক্ষের নানা রঙের থোকা থোকা ফুল মনে করিয়ে দিচ্ছে বসন্ত সমাগত। গভীর রাতে শোনা যাচ্ছে কোকিলের কুহুতান। অনুভূত হচ্ছে মৃদু উষ্ণতা। শরীর থেকে নেমে যাচ্ছে ভারী চাঁদর, জ্যাকেট কিংবা সুয়েটার।
বসন্তকে বরণ করে নেবার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে স্কুল কলেজের তরুণ-তরুণীরা। তাদের মনে গুণগুণ করছে ঋতুরাজ বসন্ত আগমনী গান। শহুরে ছেলে মেয়েরা বদলে ফেলছে তাদের শীতের পোশাক। বসন্ত উপযোগী পোশাকের জন্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক বিপনী বিতান থেকে আরেক বিপনী বিতানে। প্রিয় বসন্তকে উপভোগ্য করে তোলার জন্যে শহুরে জীবনের যান্ত্রিকতা থেকে খানিক আনন্দের জন্যে পরিবারসহ ছুটে যাবে দেশ-বিদেশের নানা জাযগায়।
শীতের জীর্ণতা পেরিয়ে প্রকৃতির বদলে যাওয়া রঙের সাথে তাল মিলিয়ে তারাই যে রাঙিয়ে দেবে আমাদের সামাজিক ক্যানভাস।
ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের অসংখ্য জেলা বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়লেও অনন্যপায় মানুষ কর্ম করে জীবনের ঝুকি নিয়ে এসব শহরেই পরিবার নিয়ে জীবন কাটাচ্ছে। একটুখানি অবসর পেলে এ সব শহরের মানুষ ক্ষণিকের আনন্দ অবগাহনের জন্যে বেরিয়ে পড়ে দূর-দূরান্তে।
যদিও আমাদের দেশে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্যে তেমন সুব্যবস্থা নেই, তারপরেও সাধারণ মানুষ আনন্দ উপলব্দির জন্যে এবং শহুরে জীবনের একঘেয়েমি দূর করার জন্যে ছুটে যায় কক্সবাজার, রাঙামাটি, পতেঙ্গা, সুন্দরবন, মাধবকুন্ড, জাফলং, পানতুমাই, বিছনাকান্দি, কুয়াকাটাসহ দর্শনীয় নানা জায়গায়। যাদের অর্থ বিত্ত আছে দেশের সীমানা পেরিয়ে তারা বসন্তকে রাঙিয়ে তোলার জন্যে পাড়ি দেয় বিদেশ।
বসন্ত শুধু প্রকৃতিকে নয়, মানব জীবনকেও নানাভাবে রাঙায়। এই বসন্তও প্রকৃতি ও মানুষকে রাঙিয়ে যাবে। বিশেষ করে আমাদের তরুণ-তরুনীদেরকে যে রাঙিয়ে যাবে, তা বলা যায়।
শিউল মনজুর। সহকারী অধ্যাপক, রাগবি-রাবেয়া ডিগ্রি কলেজ। সিলেট।