বিডি মেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ গত বছরের ১২ মে ভারতের শিলং শহরে ‘রহস্যজনকভাবে’ এসে পৌঁছনোর পর গত ন’মাসেরও বেশি সময় ধরে সেখানেই আছেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ। প্রথমে মাসখানেক বিচারবিভাগীয় হেফাজত আর হাসপাতালে কাটাতে হলেও তারপর অবশ্য তিনি জামিন পেয়ে যান – যার শর্ত হল শিলং থেকে তিনি বাইরে যেতে পারবেন না।
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ মামলায় তার পরবর্তী শুনানির দিন ১৮ ফেব্রুয়ারি । কিন্তু তার আগে তিনি বলেছেন, হার্ট আর কিডনির ক্রমশ অবনতিটাই তাকে বেশি দুশ্চিন্তায় রেখেছে।
তিনি বলেন ‘আমি খুবই অসুস্থ । আমার উন্নত চিকিৎসা দরকার। আর বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে ঢোকার অভিযোগে পাসপোর্ট অ্যাক্টে আমার বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে সেই বিচারাধীন বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। আমরা আইনি পথেই এর মোকাবিলা করছি, এখন দেখা যাক।’
তবে ওই মামলায় মেঘালয় সরকারের নিযুক্ত কৌঁসুলি আই সি ঝা জানিয়েছেন আদালতে আরও কিছু সাক্ষীর জেরা করা বাকি, তবে সালাউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়ে গেছে অনেক আগেই।
পিপি মি. ঝা বলেন, ‘এখনও দু’জন সাক্ষীকে জেরা করা বাকি। তালিকায় মোট ছ’জনের নাম বাকি থাকলেও চারজনকে আমরা বাদ দিয়েছি – কারণ এদের মধ্যে কেউ কেউ ডাক্তার, যারা তাকে পরীক্ষা করেছিলেন। তাদের সাক্ষ্যের অতটা প্রয়োজন নেই।’
পিপি মি. ঝা বলেন, বাকি সাক্ষীদের জেরার পর অভিযুক্তের জবানবন্দী নেওয়া হবে, তারপর চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক। সালাউদ্দিন আহমেদ এখনও দোষ স্বীকার করেননি বলেই মামলাটা চলছে, নইলে অনেক আগেই এর নিষ্পত্তি হয়ে যেত ।
সালাউদ্দিন আহমেদ অবশ্য বলছেন, আদালত কী রায় দেয় তার চেয়েও এই মুহূর্তে তিনি বেশি দুশ্চিন্তায় আছেন শিলংয়ের বাইরে ভাল চিকিৎসার সুযোগ পাবেন কি না তা নিয়ে।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন ‘দেশের বাইরে (সিঙ্গাপুরে) যেখানে আমি আগে চিকিৎসা করাতাম সেখানে করাতে পারলে ভাল, তা সম্ভব না-হলেও ভারতেরই দিল্লি বা অন্য শহরে যাতে আমার কিডনি ও হার্টের চিকিৎসা করানোর অনুমতি দেওয়া হয়, আদালতে আমারে আইনজীবী সে আবেদন জানাবেন। শিলংয়ের সেরা হাসপাতাল নেগ্রিমসে আমি চেক-আপ করাই, ওখানকার ডাক্তাররাও কিন্তু সেরকমই রেফার করেছেন ।’
শিলংয়ে একটি অতিথি নিবাস ভাড়া করে আছেন সালাউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা থেকে পরিবারের সদস্যরা অতটা আসতে না পারলেও বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীদের ভিড় কিন্তু সেখানে লেগেই আছে।
তিনি বলেন ‘স্ত্রী-সন্তানরা অতটা আসতে পারেন না, তবে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা থেকেই পরিচিতরা, দলীয় কর্মীরা পুরনো ভালবাসার টানে প্রায় রোজই আসেন। কোর্ট-কাছারি আর হাসপাতালের বাইরে খুব একটা কোথাও যাওয়া হয় না, তবে অনলাইনে দেশের সব খবরই পাই – আর নানা বইটই, পত্রিকা পড়েই সময় কেটে যায় ।’ বিবিসিকে ।
শিলংয়ে তিনি ঠিক কীভাবে এসে পৌঁছেছিলেন তা নিয়ে রহস্যের জট এখনও খোলেনি – তবে সালাউদ্দিন আহমেদ সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
বিবিসি