‘দেশীয় শিল্প রক্ষায় সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে’
নিজস্ব প্রতিবেদক: শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ওয়ালটনের মতো শিল্প উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ধনী দেশের কাতারে খুব সহজেই পৌঁছতে পারবে বাংলাদেশ। তিনি আরো বলেন, ওয়ালটনের মতো প্রতিষ্ঠান থাকলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের কর্তৃত্ব থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল ২০১৯) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক কারখানা পরিদর্শনকালে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্পের অভাবনীয় অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে তারা ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেন।
সকালে শিল্পমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং তাদের সফরসঙ্গীরা ওয়ালটন কারখানায় পৌঁছলে তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম, পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম এবং তাহমিনা আফরোজ তান্না।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান, হুমায়ূন কবির, উদয় হাকিম, আলমগীর আলম সরকার, ইউসুফ আলী, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শরীফ হারুনুর রশিদ, শাহজাদা সেলিম, সিনিয়র এডিশনাল ডিরেক্টর মোহসীন আলী মোল্লা, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মিলটন আহমেদ, মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌস প্রমূখ।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ওয়ালটনের মতো দেশীয় শিল্প রক্ষায় সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করা হবে। দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনে আমদানির উপর ট্যাক্স বাগানো হবে। তাহলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা উৎসাহিত হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ওয়ালটনে এসে আমার ধারণাই পাল্টে গেছে। তাদের কারখানা পরিবেশবান্ধব। এখানে সব ধরনের যন্ত্রাংশই তৈরি হচ্ছে। দেশের অর্থ ব্যয় করে এসব পণ্য আর আমদানি করার প্রয়োজন পড়ছে না। বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশে তৈরি উচ্চমানের পণ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে ওয়ালটন।
দেশীয় হাই-টেক শিল্প বিকাশ ও সুরক্ষায় শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান। বিশ্বমানের প্রযুক্তিপণ্য দিয়ে ওয়ালটন বিশ্ববাজার দখল করতে পারবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
এদিকে শিল্পমন্ত্রী তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ওয়ালটনের হাই-টেক কারখানা পরিদর্শন করে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। এখানে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কর্মীদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সবকিছু দেখার পর ওয়ালটন আমার হৃদয় স্পর্শ করেছে। আগে ইউরোপ, জাপানের মতো দেশ থেকে যেসব পণ্য বাংলাদেশে আসতো। ওয়ালটন এখন দেশেই সেসব পণ্য তৈরি করছে।
এর আগে সকালে কারখানা প্রাঙ্গনে পৌঁছে অতিথিরা ওয়ালটনের বিশাল কর্মযজ্ঞের উপর নির্মিত ভিডিও ডক্যুমেন্টারি উপভোগ করেন। এরপর তারা ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখেন। পরে তারা ওয়ালটনের বিশ্বমানের রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়া সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। পর্যায়ক্রমে অতিথিরা ফাউন্ড্রি, কম্প্রেসরসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন ইউনিট ঘুরে দেখেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বমানের প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে ওয়ালটন একটি প্রশংসিত নাম। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রায় ৭০০ একর জায়গাজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের বিশ্বমানের কারখানা। এখানে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স, লিফটসহ বিভিন্ন উচ্চমানের পণ্য তৈরি হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন পণ্যের গবেষণা ও উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটসহ বিভিন্ন বিভাগ গড়ে তুলেছে।
‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা বুকে নিয়ে ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশি পণ্য দিয়ে এবার বিশ্বজয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন। লক্ষ্য অর্জনে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ৫ মডেলের ফ্রিজ তৈরি করতে যাচ্ছে তারা। শৈল্পিক সৌন্দর্য, মান, আভিজাত্য, ধারণ ক্ষমতা, সাশ্রয়ী মূল্য এবং সর্বাধুনিক ফিচারসহ সবদিক দিয়ে যা হবে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্মার্ট ফ্রিজ।
দেশীয় হাই-টেক শিল্পের এই অগ্রগতি দেখার উদ্দেশ্যেই শিল্পমন্ত্রী এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওয়ালটন কারখানা পরির্দশন করেন বলে জানা যায়।