ফকির রাশেদ
জীবন গতিময়, বহতা নদীর মতো। মাঝে মাঝে গতিহীন হয়ে পড়ে, তাতে থেমে থাকে না জীবন। নানা চড়াই-উৎরাই গন্ডি পেরিয়ে মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে চলে। এ পথচলা একদিন হঠাৎ করেই থেমে যাবে।
মানুষ স্বপ্ন দেখে না স্বপ্ন বুনে, এই প্রশ্নটা প্রতিনিয়ত মাথার মধ্যে গিজগিজ করতে থাকে। আর এই স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে চলে তার জীবন। আমার কাছে জীবনের মানে বার বার আশাহত হয়েও আশায় বুক বাঁধা। নীরবে থেকে বাস্তবকে অস্বীকার করা যাবে না। নীরব থাকার নামই জীবন নয়। বেঁচে থাকতে হলে অস্তিত্বকে রক্ষা করতে হবে। কচুরিপানা, শ্যাওলার মতো ভাসতে আসিনি। লড়াই করতে এসেছি, তার জন্য ইচ্ছে লাগে।
মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে বেড়ে ওঠা সুবোধ বালক। সাদামাটা জীবনের মধ্যে তার শৈশব, কৈশোর কেটেছে। মাথার চুলটা এলোমেলো। বড় হয়ে সে অনেক কিছু হতে চায়। এই স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে তার নিরন্তর ছুটে চলা শেষ গন্তব্যে।
শৈশবটা কেটেছে গ্রামের নিভৃত পল্লীতে। গাড়ির গতি যত দ্রুত তার চেয়ে বহুগুণ গতিতে টানছে গ্রামে কাটানো স্মৃতিময় সময়গুলো। আর দুই গতির মাঝখানে দ্বিধায় পড়ে আছে মনের গতিটা। সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুরু মায়ের হাসিমাখা সুন্দর একটা দিন। বাড়ির পাশের পুকুরে সবার সাথে দল বেধে গোসল করা আর সাঁতার প্রতিযোগিতা। বিকেলে বন্ধুদের সাথে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানো। সন্ধ্যায় ব্রিজের পাশে বন্ধুদের সাথে খোশগল্পে মশগুল থাকা।
কেটে যায় মাসের পর মাস, হয় না যাওয়া সেই গ্রামে। জীবন এ রকমই। বাল্যকালের স্বপ্ন পূরণের কথা বাদই দিলাম। মাঝেমধ্যে মনে হয় রহস্যের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়েছে। রহস্য সৌন্দর্যেরও সৃষ্টি করে। এজন্য রহস্যের মধ্যে লুকিয়ে থাকে স্বপ্নের নীলাচল।
স্বপ্নের বীজ বুনতে হবে নিজের হাতে । স্বপ্নকে নয়, লক্ষ্যটাকে স্থির করাই হবে স্বপ্ন। জীবনে হতাশা বলে কিছুই নেই। হতাশা, নিরাশা, ব্যর্থতা নামক শব্দগুলোকে মারণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। সময় হয়েছে এখন আমাদের। এ পৃথিবীর প্রতিটি দিনই সম্ভাবনার এবং ইচ্ছেশক্তি থাকলে সবই সম্ভব। ইচ্ছেশক্তিই জীবনের স্বপ্ন পূরণের স্তম্ভ।
লেখক: এলজিএসপি’র কর্মকর্তা