বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাপানকে মডেল ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে চেয়েছিলেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: জাপানের মতই কৃষি অর্থনীতি থেকে শিল্পনির্ভর অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন করা হচ্ছে।
সে জন্য বাংলাদেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে জাইকার প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জাপান সফরে বৃহস্পতিবার জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার প্রেসিডেন্ট শিনিচি কিতাওকার সঙ্গে হোটেল নিউ অটানিতে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন: এশিয়াতে উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত সব ধরনের দেশই আছে। আমরা যদি সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে পারি তাহলে বিশ্বে এশিয়া নেতৃত্ব দেবে। সে সম্ভাবনা আছে।
জাইকার প্রধান তার সংস্থা বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।বাংলাদেশে আরও বেশি পরিমাণে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য জাইকা কর্মসূচি নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
জাইকা প্রধানের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান জাইকার প্রেসিডেন্ট।
তিনি আশা করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আগামীতে আরও সম্মৃদ্ধ ও সুখী দেশ হবে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে জাইকার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়বে।
জাপান এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী। ১৯৭২ সাল থেকে দেশটির কাছ থেকে বাংলাদেশ মোট এক হাজার ১৩০ কোটি ডলারের সহায়তা পেয়েছে। বুধবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে আড়াইশ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তি হয়েছে।
এসময় বাংলাদেশের স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই জাপানের সহায়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত জাপানিদের জন্য গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ও জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ২৯ মে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ৪০তম অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট এসিসটেন্স (ওডিএ) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ফলে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টোকিওতে নিজ নিজ পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন যথাক্রমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ ও বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।
৪০তম ওডিএ প্যাকেজ চুক্তির আওতায় যে ৪টি প্রকল্প রয়েছে সেগুলো হলো : মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকা মাস রেপিড ট্রানজি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (লাইন-১), সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ উন্নয়ন প্রকল্প এবং এনার্জি ইফিসিয়েন্সি এন্ড কনজার্ভেশন প্রমোশন ফিনেন্সিং প্রজেক্ট (পর্ব-২)।