খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি।আল নাহিয়ান খান জয় বরিশালের ছেলে। তিনি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক হয়ে যাওয়া সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের স্থলে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। এর আগে ওই কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি ছিলেন জয়।
শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আল নাহিয়ানকে পরবর্তী কাউন্সিল পর্যন্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা হয়।
জয় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আলী খানের ছেলে। বরিশাল জিলা স্কুলে পড়াশোনা। তখন থেকেই একটু একটু করে ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া শুরু। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান জয়ের পূর্ব পুরুষও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
বরিশাল থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকা কমার্স কলেজে এবং সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই রাজনীতিতে পুরোদমে সম্পৃক্ত হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং সিনিয়র সহ সভাপতি পদে দায়িত্ব পান। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত আল নাহিয়ান খান জয়।
২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়।
ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের পর থেকে ছাত্রলীগের দুই নেতা সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ এবং গোয়েন্দা রিপোর্ট মিলে বিস্তর অভিযোগ জমে সংগঠনটির সাংগঠনিক নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন, দিনের অর্ধেকটা সময় ঘুমিয়ে কাটানো, সাংবাদিক বা শীর্ষ নেতাদের ফোন না ধরা, মেয়ে আর মাদক নিয়ে পড়ে থাকা, টেন্ডার বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ার মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো।
গত শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড বৈঠকে ছাত্রলীগের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। নিজেদের বিরুদ্ধে অভি্যোগ থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সংগঠনের সাংগঠনিক শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দেন ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা আর হয়নি। শোভন-রব্বানীকে সরিয়ে দেয়া হয় পদ থেকে।