বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বাজারে ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দাম, মাথায় হাত পরেছে সাধারণ মানুষের। পেঁয়াজের ঝাঁঝে চোখে জল মধ্যবিত্তের। রান্নাঘরে ফের পিয়াজকে ফিরিয়ে আনতে রফতানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিল ভারত সরকার। চড়া দামের উপর লাগাম টানতেই পরবর্তী কোন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বজায় থাকবে। তেমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রক। খবর ভারত মিডিয়ার।
রবিবার নিষেধাজ্ঞা জারির একটি নোটিশ ইস্যু করে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। পেঁয়াজের ক্রমবর্ধমান দামের জন্য সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের খাবার পাতে টান পরেছে। কারণ বেশিরভাগ মানুষের জীবনেই পিয়াজ সাধারণ খাবারের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “পেঁয়াজের রফতানি নীতিতে সংশোধন আনা হয়েছে। যা পরবর্তী নির্দেশ জারি পর্যন্ত বহাল থাকবে।” এক মাসে পেঁয়াজের দ্বিগুণ মূল্যবৃদ্ধি। বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কিলো দরে। বৃষ্টির জেরে নাসিক থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাড়ছে দাম, মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। পুজোর আগে হেঁশেলে আগুন। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে একই ছবি। একমাস আগেও খুচরো বাজারে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল পেঁয়াজ। দাম দ্বিগুণ হওয়ায় জেরবার ক্রেতারা।
বাংলায় পিয়াজ উৎপাদন কম হয়। মহারাষ্ট্রের নাসিক, কর্ণাটকের মাকলি ও অন্ধ্রের কুরনুল থেকে আমদানি করা হয়। চলতি বছরে অতি বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি নাসিক ও মাকলিতে। ক্ষতি হয়েছে পিয়াজ চাষে। এর জেরে উৎপাদন তলানিতে। যার প্রভাব পড়েছে পাইকারি বাজারে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিবহণগত নানা সমস্যা।
ভারত মিডিয়ার ওই খবরে বলা হয়, নাসিক থেকে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মধ্যপ্রাচ্যে পেঁয়াজ রফতানি গত কয়েক বছরে বেড়েছে। এর জেরে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহে টান পড়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কালোবাজারি। অভিযোগ আমদানি কম হওয়ায় খুচরো বাজারে অনেক ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছেন। নজরদারি শুরু করছে দাম নিয়ন্ত্রণে তৈরি টাস্ক ফোর্স। তবে শুধু বাংলাতেই নয়। দেশজুড়েই পিয়াজের দাম মাত্রা ছাড়া। উৎসবের মরশুমে যা চিন্তা বাড়িয়েছে কৃষি মন্ত্রকের কর্তাদের। বিদেশে রফতানি কমাতে শুল্ক বাড়িয়েছে কেন্দ্র।
রাজধানী দিল্লি, মুম্বই, লখনউতে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। কলকাতাকেও ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে পেঁয়াজ। অন্যদিকে পোর্ট ব্লেয়ারে দাম পৌঁছে গিয়েছে ৮০-৯০ টাকা। ঠিক উৎসবের মরশুমে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে খাবারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মধ্যবিত্তের হেঁসেলে আগুন অবস্থা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কম দামে সরকারি ভাবে পেঁয়াজ বিক্রির কথা ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার তিনি জানিয়েছিলেন রাজ্য সরকার ২৩.৯০ টাকা কিলো দরে পেঁয়াজ বিক্রির করবে। সেই মতো শহরের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ভ্যানে করে সরকারি উদ্যোগে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছিল। কিন্তু দেশের বাঁকি অংশের পেঁয়াজের দাম ধরা ছোঁয়ার বাইরে পৌঁছে গিয়েছে।