বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বাবরি মসজিদের বিতর্কিত ওই জমি সরকার পরিচালিত একটি ট্রাস্টের হাতে তুলে দেয়া হবে এবং তারা সেখানে একটি রামমন্দির নির্মাণ করবেন। আর মসজিদ নির্মাণের জন্য শহরের অন্য কোনো জায়গায় মুসলমানদের ৫ একর জমি দেওয়া হবে। আজ শনিবার ভারতে বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যার বাবরি মসজি মামলার এই রায় দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর।
গত ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি শেষ হয়। অযোধ্যায় ২ দশমিক ৭৭ একর জমির দাবি জানিয়েছিল হিন্দু এবং মুসলিম উভয়পক্ষই।
১৯৮০ সাল থেকেই এই ইস্যুটি রাজনৈতিক বিষয় হয়ে উঠেছে। ১৯৯২ সালের ১৬ শতকের বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয় দক্ষিণপন্থি সংগঠন। তাদের বিশ্বাস, ভগবান রামচন্দ্রের জন্মভূমির ওপর তৈরি পুরোনো মন্দিরের ভগ্নাবশেষের ওপর করা হয়েছে সেটি।
সেই সময়ে হিংসার ঘটনায় সারা দেশের ৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। সেই জায়গায় মন্দির তৈরি করতে চায় হিন্দুরা, মুসলিম সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, মসজিদের ধ্বংসাবশেষের ওপর মসজিদ তৈরির কোনো প্রমাণ নেই।
এদিকে এই রায়কে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় অযোধ্যার আশপাশে অনেক গ্রামেই উড়ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ ড্রোন। ৩০টি বোম্ব স্কোয়াড গেছে বৃহস্পতিবার রাতেই। অযোধ্যার অধিকাংশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। চলবে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেখানে ৪ হাজার আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ান পাঠিয়েছে। সেইসঙ্গে ১৬ হাজার পুলিশকর্মী। থমথমে শহরের অনেকে অশান্তির ভয়ে আগে থেকেই বাড়ির শিশু ও মহিলাদের সরিয়ে দিয়েছেন অন্যত্র। সোশ্যাল মিডিয়া এ নিয়ে কোনো পোস্ট দেওয়া নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন অযোধ্যার প্রশাসন। আশপাশের প্রতিটি গ্রামে ১০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। কোনো রকম উত্তেজক অবস্থা হলে তারা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাবে।
সাম্প্রদায়িক দিক থেকে স্পর্শকাতর এলাকায় অনেক বেশি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতীয় রেল তাদের কর্মীদের জন্য সাত পাতার নির্দেশিকা জারি করেছে। সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর মধ্যেই তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছেন, তারা যেন প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে অত্যন্ত সংযত থাকেন।