এএইচএম নোমান
যে কোন সামাজিক সাংস্কৃতিক, স্থানীয় উদ্যোগই সামাজিক শক্তি ও সামাজিক পুঁজি। সমাজের সুযোগ, সৃষ্টি, সম্পদ-মানবিক ও প্রাকৃতিক সমস্যা নানান দিক মাটি-মানুষ মালিকানাকে সামনে এনে ক্ষেত্র মতে তুলে ধরাই এধরনের সংগঠনের কাজ। অধিকন্তু মানব ও প্রাকৃতিক সৃষ্ট বিষয়সমূহ জন্ম-জীবন তাদের নখদর্পণে। শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা বাণিজ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য যোগাযোগ-স্থল-নৌ-আকাশ স-ব কিছুই ভুক্তভোগীর বিবেক তাড়না ও তাড়িতের মাটি-বাস্তব উপলব্ধি। যা বলা ও প্রকাশনায় এসে যায়। কেউ এটাকে মূল্য দেয়, কেউ লুফে নেয়, কেউ সমর্থন করে, কেউ সমালোচনা করে। আবার কেউ হিংসা করে, গোষ্ঠি স্বার্থে বিরোধিতা করে, পরশ্রীকাতরতায় ভোগে, কেউ আবার অপরাজনীতিতে টানে, আবার অনেকে এস-ব কাজকে বেহুদা সময় নষ্টও মনে করে। আবার কেউ এখতিয়ার নিয়ে ঝগড়া ঝাটিও করে।
গত ৬ নভেম্বর ২০১৯ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সচিব মোঃ আবদুস সামাদ এর সভাপতিত্বে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ-রুটের বিভিন্ন সমস্যা সম্ভাবনা ও সমাধান নিয়ে এক ভিন্নধর্মী আনুষ্ঠানিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ভিন্নধর্মী যেহেতু সামাজিক শক্তি ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফোরাম এর মূল উদ্যোক্তা। পাওয়ার পয়েন্টে এম জহিরুল আলম মূল বিষয়সমূহ উপস্থাপন করেন। সভায় ঢাকায় কর্মরত ভোলাবাসী শীর্ষ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম-ভোলা-লক্ষ্মীপুর এবং ফোরাম ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেন।
মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, জেলা প্রশাসক, ভোলা, বর্ণিত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে লিখিত সরকারি যে সকল মতামত দিল তা প্রায় সকল উপকূলীয় ও নীতি নির্ধারকদের জন্য আলোচনা ও সিদ্ধান্তের খোরাক হেতু তার পুরো লিখাটি তুলে দিলাম- ‘ভোলা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জেলা। ভোলা জেলার প্রায় দুই লক্ষ লোক চট্টগ্রামে নানাবিধ প্রয়োজনে অবস্থান করেন। তাদের চট্টগ্রামে যাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ-রুট। এছাড়া ভোলা জেলার মালবাহী এবং দেশের ২১টি জেলার মালবাহী ট্রাকসমূহ বরিশাল হয়ে এ রুট দিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়া আসা করে। এ পথে আসা যাওয়ার একমাত্র বাহন সী-ট্রাক এবং ফেরি। ভোলার ইলিশা হতে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাট পর্যন্ত মাত্র ১-২টি ফেরি চলাচল করে। ফেরিতে ৩-৪ ঘন্টা সময় লেগে যায়। এছাড়া প্রতিদিন ১টি সী-ট্রাক এবং বে-ক্রসিং সনদপ্রাপ্ত ২টি লঞ্চ আসা যাওয়া করছে। বছরের অন্যান্য সময়ে বে-ক্রসিং সনদবিহীন লঞ্চসমূহ এই রুটে চলাচল করে।
লক্ষ্মীপুরের ফেরিঘাটটি মজুচৌধুরীর হাটে হওয়ার কারণে প্রায় ১ ঘন্টা সময় বেশী লাগে এবং শুকনো সময়ে অনেক স্থানে ফেরি আটকে থাকে ফলে ৫-৬ ঘন্টা সময় লেগে যায়। এখানে নদীর নাব্যতা রক্ষার্থে ড্রেজিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। মজু চৌধুরীর হাটের পরিবর্তে মতির হাটে ফেরি ঘাটটি স্থানান্তর হলে কমপক্ষে ১ ঘন্টা সময় কম লাগবে এবং মাঝে নদীতে ফেরি আটকানোর সম্ভাবনা কম হবে।
তজুমদ্দিন-মনপুরা নৌরুটের সী-ট্রাক মেরামত/প্রতিস্থাপন এবং মনপুরা উপজেলার জনতা বাজার-চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া নদীতে নতুন সী-ট্রাক সার্ভিস চালুকরণসহ ভোলা জেলার বিভিন্ন চরসমূহে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে সী-ট্রাক সার্ভিস চালুকরণ প্রয়োজন। এছাড়া এ জেলায় অনেক (৭৩) চর রয়েছে। চরগুলো মূল ভূখন্ড হতে মেঘনা নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন। চরসমূহে বসবাস করছে কৃষি, জেলেসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। চরসমূহ হতে মূল ভূখন্ডের সাথে ছোট ট্রলারের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হয় বিধায় ঘূর্ণিঝড় কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণহানি ঘটছে। উন্নত নৌযান না থাকায় দুযোর্গকালে চর এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে আনা সম্ভব হয় না। এছাড়া দুযোর্গকালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের শিক্ষকগণ মূল ভূখন্ড হতে বিদ্যালয়ে যেতে পারে না বিধায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারণে তারা জরুরী চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায়।’
অঞ্জন চন্দ্র পাল, জেলা প্রশাসক, লক্ষ্মীপুর প্রায় একই লিখিত নোট দেন এবং বক্তব্যে রামগতি-কমলনগর নদী ভাঙ্গনরোধে বেড়ী বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড-সেনাবাহিনীসহ সড়ক-নৌপথ সমন্বিত ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে জোর দেন।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু, মাননীয় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি মহোদয়কে প্রায় একই বিবরণীসহ লিখিত আবেদন জানান। সভায় জনাব শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয়,অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম, ড. সুলতান আহমেদ, চেয়ারম্যান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কমোডোর এম মাহবুব-উল ইসলাম- চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিএ, সৈয়দ মোঃ তাজুল ইসলাম- চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিসি, আবদুস সবুর- অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফোরাম সভাপতি লায়ন আবুল কাশেম, মাহবুব রহমান হিরণ, ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার, লায়ন আতিকুল্লা বাহার, শাহ আলম খান, আবদুল মজিদ, মোঃ মিজানুর রহমান, মাহাবুবুর রহমান সেলিম, আবুল বশির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সহকারী সচিব কর্তৃক সভার নোটিশ মন্ত্রী পরিষদ সচিবসহ বর্ণিত সংশ্লিষ্টদের বরাবরে প্রেরণ করা হয়। উপস্থাপনায় নিম্নোক্ত সুপারিশ আলোচনা ও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় যে,
১। মজুচৌধুরীর ঘাট সরকারের ঘোষিত নৌ-বন্দর হিসেবে কার্যকর সহ সময় সাশ্রয়ী মতিরহাটে ফেরিঘাট স্থাপন করা।
২। মজুচৌধুরী, ইলিশা, আলেকজান্ডার ও বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল দৌলৎখা সহ সকল ঘাটের ইজারা নিয়মতান্ত্রিক করা।
৩। সকল রুটগুলোর দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়ার হার যথা ভোলার ইলিশা ঘাট হতে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ঘাটের নৌ-দূরত্ব হল ২৮ কি.মি.। ভাড়ার হার কি.মি. প্রতি ১.৭০ টাকা। সে হিসেবে ভাড়া ৪৭.৬০ টাকা। BIWTC নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া হয় ১২৫ টাকা অথচ লিখিত অনুমতি দিয়েছে প্রায় তিনগুণ। অনুমতি যেমনি প্রশ্নবোধক তেমনি বিধিগত ভিত্তিই বা কি ? এর ব্যাখ্যা BIWTA, BIWTC এর নিকট চেয়েছে।
৪। পুরনো বিকল সী-ট্রাকগুলোর পরিবর্তে নতুন সী-ট্রাক চালু করা।
৫। বৃহদাকার রো-রো ফেরির ব্যবস্থা করা।
৬। বাৎসরিক ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর সাথে নিয়মিত ড্রেজিং কাজ চলমান রাখা।
৭। বে-ক্রসিং সনদধারী বাহন ভোলা-লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন রুটে বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করা। ন্যূনতম ৩টি ফেরি সার্বক্ষণিক সচল রাখা।
৮। ফেরি রুটের দুই প্রান্তে ঘাটে শৌচাগার সহ যাত্রী সাধারণের জন্য বিশ্রামাগার ব্যবস্থা করা।
৯। চট্টগ্রাম-বরিশাল ভায়া ভোলা উন্নতমানের জাহাজ নামানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
১০। লক্ষ্মীপুর-ঢাকা সরাসরি নৌ-সার্ভিস চালু করণ।
১১। ইলিশাঘাটে নৌ টার্মিনাল নির্মাণ করা যেন মাদার ভ্যাসেলগুলো সেখানে মালামাল লোডিং আনলোডিং করতে পারে।
১২। ইজারার দ্বৈততা প্রথা রহিত করে বিভাগীয় কমিশনার অফিস অথবা বিআইডব্লিউটিএ’র আওতায় আনা। ভোলার প্রাকৃতিক গ্যাস, চর কুকুরি মুকুরি টাওয়ার, মনপুরাসহ ৭৩টি চর ও নিঝুম দ্বীপকে নৌ সড়ক আকাশ রেল নেটওর্য়াক এর ভিন্নতায় এনে, মহিষের দই, ইলিশ, কৈ, মাগুর এবং রামগতির শেখের কিল্লা ও আলেকজান্ডার বেষ্টিত দর্শনীয় বেড়ী বাঁধ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের জন্য এক বিশেষ আকর্ষন যা কার্যকর করা দরকার।
সভায় বাংলাদেশ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর মাহবুব-উল ইসসলাম তাঁদের অন্যতম প্রকল্প বিশ্ব ব্যাংক ঋণ টাকায় চট্টগ্রাম-আশুলিয়া আন্ত ও আঞ্চলিক সংযোগ কার্যক্রম উদ্যোগ তুলে ধরেন। যা চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুলিয়া করিডোর তথা, বাংলাদেশ আঞ্চলিক ওয়াটারওয়ে ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প’র আওতায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার, চাঁদপুরের আলু বাজার, হরিনা, বরিশালের হিজলা, লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাট, বদ্দারহাট, বরিশালের লাহার হাট, ভোলার ভেদুরিয়া, দৌলতখান, তজুমুদ্দিন, মনপুরা ও ইলিশা, চট্টগ্রামের স্বন্দীপ, নোয়াখালীর চেয়ারম্যান হাট, তমরুদ্দীন মোট ১৫টি টামিনাল, ফেরী ঘাট ইত্যাদি গতি প্রবাহ বাড়ার পরিবর্তন উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ রিজিওনাল ওয়াটারওয়ে ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট -১ (চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ করিডোর) কেবলমাত্র বাংলাদেশের জন্য নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন কল্পে একটি সুদূরপ্রসারী প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল (বিবিআইএন) উপ-অঞ্চলে একটি মাল্টিমোডেল নৌপথ নেটওয়ার্ক বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর হয়ে মেঘনা ও গোমতী নদী পেরিয়ে পণ্য ও যাত্রীবাহী জাহাজসমূহ সরাসরি ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ত্রিপুরায় পৌঁছে যাবে।
১৯৭০ সালে ১২ নভেম্বর ‘বন্যার ফসল’ সমবায়ী পরিচিতির মাধ্যমে উপকূলীয় এলাকা ভোলার দৌলৎখায় জন্ম ও লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার আমার কর্ম জীবন শুরু। তখন থেকে দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরে সামাজিক শক্তিকে পুঁজি করে ত্রাণ পুনর্বাসন উন্নয়ন অধিকার ক্ষমতায়ন নিয়ে দেশী-বিদেশী সরকার-অসরকারের সাথে যৌথতা নিয়েই অদ্যাবধি নিরন্তর পথ চলা। পাকিস্তানের কবর, মুক্তিযুদ্ধ-বাংলাদেশের জন্মদিন থেকে এ যাবৎ সরকারের শীর্ষ থেকে মাঠ ঘাটের বিভিন্ন স্তরে অভিজ্ঞতার খাতায় সফল বিফল ভাল মন্দ তিতা মিষ্টি কষ্ট- সবকিছুই আমার জীবন-স্বাদে ভরপূর। কাজ নিয়ে আমার বক্তব্য মাটি মানুষকে নিয়ে অঞ্চল দেশকে এগিয়ে নেয়া মূলক।
গত ৬ নভেম্বর নৌ-মন্ত্রণালয়ের সুদর্শন সচিব-সভাপতির পরিকল্পিত, সুসংগঠিত, নিয়মতান্ত্রিক, গঠনমূলক, আন্তরিক যা সামাজিক শক্তির যৌক্তিক চাহিদার সমন্বয় সভা, যা একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। সরকারি উঁচু পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে জড়িয়ে তার মাধ্যমে নীতি নির্ধারনী টেবিলে বাস্তবায়নের জন্য তুলে আনা কম কথা নয়। তার চেয়ে বেশী হলো নৌ-মন্ত্রণালয়ের সামর্থক উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট সকলের উপস্থিতি অংশগ্রহণ ও গুরুত্ব দলিলি করণ ছিল যথাযথ। বিশেষ করে সচিব মহোদয়ের চতুর্দিকি ও চতুর্মূখী বুদ্ধিমত্তায় সাবলীল পরিবেশের মাধ্যমে সরকার অসরকারের পার্টনারশীপ প্রয়াস স্বাধীন দেশের জন্য খুবই প্রয়োজন- তার প্রমাণ হয়েছে এই সভা। অভিজ্ঞতার মাপকাঠি ও তূলনার বিচারে অতীত বর্তমান হালচালের বাজারে সামাজিক শক্তি ও সরকারি শক্তির একাত্মতায় মানব মুক্তির পুঁজি মিলন ভারী হউক- এই কামনায় আমি তৃপ্ত।
এএইচএম নোমান: প্রতিষ্ঠাতা, ডরপ এবং গুসি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী।
nouman@dorpbd.org