সাংবাদিক ও শিশু সাহিত্যিক ইব্রাহিম নোমান আমাদের শিশু সাহিত্যের পরিচিত নাম। শিশু উপযোগি নানা বিষয় লিখে শিশু পাঠকদের নিকট যেমন অর্জন করেছেন জনপ্রিয়তা তেমনি লেখার মান বিচারে বিজ্ঞ পাঠকদের নিকট থেকে পেয়েছেন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
তাই ইব্রাহিম নোমানের লেখা ও বই নিয়ে আগ্রহ বোধটা আমার সকল সময়ের। এবার যখন একুশের বই মেলায় তাঁর লেখা শিশুতোষ বই ভূতের স্কুলে সেলফি প্রকাশিত হলো তখন বইটি সংগ্রহ করতে দেরি করিনি এবং অসংখ্য পাঠকের মতো তাঁর এই বইটি আমার ও আমার শিশুপুত্র সিলেট সরকারী পাইলট স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ইবতিসাম জামান সৌহার্দেরও ভীষণ ভালো লেগেছে।
তিনটি গল্প পিংকু ভূতের পড়ালেখা, ভূতের স্কুলে সেলফি ও রিয়ানার ভূত বন্ধু দিয়ে সাঁজানো বইটির নান্দনিক প্রচ্ছদ ও ভেতরের যতœশীল কারুকাজ শিশুদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। এর জন্য শিল্পী সোহেল আশরাফকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ইব্রাহিম নোমানের গল্পবলার কথন ভাষা খুবই সাবলীল ও চমৎকার। শিশু উপযোগি অথচ সম সাময়িক প্রচলিত শব্দ ব্যবহার করে তিনি তাঁর গল্পগুলোর বাক্য নির্মাণ করেছেন। যে কারণে কালান্তর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইটি যে শিশুসহ সব বয়সী পাঠকের ভালো লাগবে তা, নিঃসন্দেহে বলা যায়।
ভূতের স্কুলে সেলফি বইয়ের প্রথম গল্পের নাম পিংকু ভূতের পড়ালেখা। এই গল্পের অংশ বিশেষ এখানে তুলে ধরা হলো;
নিঝুমপুর গ্রাম। সেই গ্রামে ছিল এক বিরাট বটগাছ। ওই বটগাছে থাকত লাল্টু ভূতের পরিবার। লাল্টু ভূতের তিন ছেলে- টিংকু, পিংকু আর বংকু। একদিন সকালে লাল্টু তার মেঝো ছেলে পিংকুকে ডেকে জিজ্ঞেস করল সে রোজ রোজ কোথায় যায়? পিংকু ভয়ে ভয়ে বলল, বাবা আমি রোজ পাঠশালায় যাই পড়া শিখতে। বেশ কতগুলো পড়া পিংকু তার বাবা লাল্টুকে শুনালো। ছেলের মুখে পড়াশোনা শুনে লাল্টু একেবারে থ হয়ে গেল।
এরকম চমৎকার করে সহজ সরল ভাষায় গল্পটির কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। তবে বলতে হয় ভূতের ¯ু‹লে সেলফি বইয়ের তিনটি গল্পই এমন সুন্দর করে গোছানো ভাষায় লেখা হয়েছে, যা পাঠকের মনোযোগ সহজেই আকর্ষণ করে। বইটির গল্পগুলো যে শুধু শিশু-কিশোরদের আনন্দ দেবে তা নয়। গল্পগুলোর ভেতর দিয়ে ইব্রাহিম নোমান শিক্ষার গুরুত্বকেও উপস্থাপন করেছেন।
সাংবাদিক ও শিশু সাহিত্যিক ইব্রাহিম নোমান এর নিকট থেকে আমরা ভূতের স্কুলে সেলফি বইয়ের মতো আরো সুন্দর সুন্দর গল্পের বই প্রত্যাশা করি।