এএইচএম নোমান
’৭০ এর ১২ নভেম্বর যে ঝড় তুফান বন্যা উপকূলীয় এলাকায় হলো তা ছিল ভয়াল। এরপর কয়েক মাসের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ভয়াবহ এ মুক্তিযুদ্ধকালে শুধু যে পাকহানাদার বাহিনী তা নয়, এলাকায় ছিল রাজাকার, আলবদর। এরপরও দুর্ভিক্ষ, মন্দা, জলোচ্ছ্বাস, মঙ্গা, রাজনৈতিক হানাহানি কম যায়নি। এ সব বাধা আমরা উতরিয়েছি।
বর্তমানে করোনা ভাইরাস-১৯ এর ভয়াবহ আক্রমন আমাদের দিকে ধেয়ে এসে গেছে। এর ভয়াবহতা অনুধাবন করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার ভাষণে অনেকগুলো ঘোষণা দিয়েছেন-যা সময়োপযোগী। আমাদের সেগুলো মানতে হবে। পাশাপাশি অন্য পথ ও পন্থা এবং বিকল্প হিসেবে আমরা কি করতে পারি এটাও তিনি নিশ্চয় খুঁজতেছেন। এই জন্য আমরা যে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছি এগুলো অনিবার্য। আমরা আক্রান্ত হচ্ছি কিন্তু ভয় পেলে চলবে না। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, পতাকা এনেছি এবং একটি ভূ-খন্ডও পেয়েছি। সংগ্রাম, যুদ্ধ, জয় ব্যপারে আমরা অভিজ্ঞ। প্রতিকূলতা কিভাবে সামাল দিতে হয় সে অভিজ্ঞতা আমরা অতীতে রপ্ত করেছি।
করোনার ফলে যে মন্দা, দুর্ভিক্ষ সামনে আসতে পারে তা শ্রমিক, চাষী, ক্ষেত-খামারী, নিম্ন আয়কারীদের-ই বেশী ভোগান্তি হবে। এখানে কৃষিভিত্তিক উৎপাদনের কথা বলতে চাই- যা আল্লাহ’র দান। জল, জমি, জন এর মালিকানা ও কর্তৃত্ব দেখতে চাই।
আমাদের ধ্বংস থেকে সৃষ্টির শিক্ষায় এগুতে হবে। সে শিক্ষাটা হলো- যে ভয়াবহতা সামনে আসবে, সে বিষয়ে আমাদের বিকল্প চিন্তা এখন থেকেই করতে হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে তার যত হাত (জনবল) আছে তাদের কাজে লাগাতে হবে। এ মন্ত্রণালয়ের বিশাল জনবল গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। তাদের ব্যবহার করে কৃষকদের বীজ, সার, টেকনোলজি, সেচ ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হবে। বিএডিসি এ বিষয়ে একটি বড় ভ‚মিকা পালন করতে পারে। ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় বীজ, সার, কীট নাশক, ঔষধ চলাচলে ছাড় দিয়েছে। কৃষি বিপ্লব তথা অর্থনৈতিক মুক্তির পথ এগিয়ে নেয়া এখন এবং এখান থেকেই সম্ভব।
এটা করার বিশাল সুযোগও আমাদের সামনে আছে। কারণ সবাই শহর থেকে গ্রামে চলে গেছে, তারাও উৎপাদন উন্নয়ন সিদ্ধান্তে পারিবারিক বন্ধনে সাথে থাকতে পারে। করোনার বিধি নিষেধ ভয়াবহতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। পুলিশ বাহিনী মাঠে নামছে, আর্মিও আছে কিন্তু তারাতো কৃষকদের পিটিয়ে সাবধান করলে হবে না। একটা উপজেলায় (রামগতি) খবর নিয়ে জানতে পারলাম, সেখানে কমবেশী ৪শ’ লোক দেশের বাইরে থেকে এসেছে। তারা আসতেই পারে। কিন্তু এদের মধ্যে মাত্র ১শ’ চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রশাসন- জন প্রতিনিধি ঘুরে ফিরে সেই ১শ’ আর ৪শ’র মধ্যে বিধি নিষেধ মান্যতায় কাজ করা দরকার। কিন্তু বাকী আড়াই লাখ লোকের জন্য আনেক কাজ করার আছে। আপাততঃ তাদের ঝুঁকি মোকাবেলায় উৎসাহ দিব, যে কাজটা তারা করছে তাকে মন মানসিকতা ও সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে দিতে হবে যেন স্ব-উন্নয়ন কাজটা করতে পারে।
শ্রম ও উৎপাদনের এ বিপ্লব আমাদের ঘটাতেই হবে, তা হলে পৃথিবীব্যাপী মন্দা হলেও আমরা মোকাবেলা করতে পারব ও পরিত্রাণ পাব। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী-কৃষিসহ যে খাতগুলো যেমনঃ মুরগী ডিম দিতে থাকবে, গরু দুধ দিতে থাকবে, মাছ বাড়তে থাকবে, ফসল ক্ষেতে হতেথাকবে এগুলো কিভাবে বাজারজাত হবে, মূল্য পাবে, সংরক্ষণ হবে, মজুদদারী না হয় এসব দিকে সংশ্লিষ্ট নজরদারী রাখতে হবে। কর্মকর্তা, কর্মচারীরা এ পরিস্থিতিতে খামারীদের বাড়ীতে যাবে, তদারকি করবে- তবে অবশ্যই প্রটেকশন নিয়ে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডাক্তার নার্সদের মত পোষাক তাদেরকেও সরবরাহ করতে হবে।
আমাদের উৎপাদন এমন এক স্থানে নিতে হবে যেন আমরা পৃথিবীর মধ্যে দৃষ্টান্ত দেশ হিসেবে দাঁড়াতে পারি। দুর্যোগ মোকাবেলা করে উৎপাদন কিভাবে বাড়িয়ে আল্লাহ’র নেয়ামত কিভাবে আমরা সাজিয়ে ফসল ঘওে নিতে পারি তাই আজ করার বিষয়।
এমনিতেই পশ্চিমাদের সৃষ্ট জলবায়ু ব্যবস্থাপনায় আমরা আক্রান্ত ও তৎকর্তৃক করোনা ভাইরাসেও আমরা আক্রান্ত। আমরা বসে থাকবো না। আমাদের গান আমাদেরই গাইতে হবে। আমাদের মাছ-মুরগী-গবাদিপশু (মামুগ), শাক-সবজি ফসল উৎপাদন এমনভাবে বাড়াতে হবে যেন আমরা রফতানি করতে পারি। আমরা যেন ভবি মন্দায় আটকে না থেকে উঠে আসতে পারি। পশ্চিমারা যে ধরণের প্রোপাগান্ডা করতে পারে, প্রোটেকশন প্লান নিতে পারে, আমরাতো তা নিতে পারি না। ওরা ধনী, ওদের টাকা আছে আমাদের টাকা নেই। ওরা বেকারদেরকে সাহায্য করতেছে, যারা দোকান পাট বন্ধ করছে তাদের টাকা দিতেছে। সবখানে তাদের ডিসিপ্লিন আছে, দুর্নীতি নাই, স্বচ্ছতা আছে। আমাদের কি আছে? আছে মনোবল, সাহস ও ধৈর্য্য। কাজের মাধ্যমে আমাদের কর্মজনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৮০/৯০ ভাগ কভার করতে পারি। আর এটা করলেই আমরা কিন্তু এগিয়ে গেলাম, জিতে গেলাম এবং এটা একটা গেরিলা যুদ্ধ। এ যুদ্ধে অবশ্যই কাজ আমাদের ফ্রন্ট ফাইটিং করোনাকে পরাজিত করা আর ব্যাক ফাইটিং উৎপাদন বৃদ্ধিতে হাত দেয়া।
এখন গার্মেন্টস শ্রমিকদের ৫ হাজার কোটি টাকা সরকার বেতন হিসেবে প্রনোদনা দিবেন। কিন্তু একই সময়ে যারা ক্ষুদ্র কৃষক ক্ষেতে খামারে কাজ করে, তাদের যে পুঁজি-ঋণ আটকা পড়ে গেল এর খেসারততো তাদের-ই দিতে হবে। ঋণতো জুন মাস পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। সুদ মওকুফ করতে হবে। ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত যাদের ক্ষুদ্রঋণ আছে তা রেয়াত দিতে হবে। পিকেএসএফ-এনজিও, বিআরডিবি, সমবায়ে যে সকল ঋণ মাঠে আছে তাদের তালিকা নিয়ে স্বচ্ছতার মাধ্যমে এ রেয়াত কার্যকর করা যাবে। এ রেয়াত উৎপাদন যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহ ও সাহস যোগাবে। সরকারের আস্থায় কাছাকাছি হবে। এসকল ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ঋণ গ্রহীতারা উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত। লক্ষ্মীপুর যা সোয়াবিন জেলা নামে পরিচিত। সেখানে ’৭০ এর বন্যা ও ’৭১ এর যুদ্ধ ও পরবর্তীতে আমরা যুদ্ধের পাশাপাশি উৎপাদনের সাথে জড়িত ছিলাম। চিন্তা ছিল যে দীর্ঘ সময় যুদ্ধ হতে পারে তাই আমরা উৎপাদন যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছি। এর জন্য আমরা উৎপাদন ব্রিগেড তৈরী করেছি, উৎপাদক সমিতি করেছি।
দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু যখন কম্পলসারি কো-অপারেটিভ এর কথা বললেন আমরা রামগতির চর কালকিনি ইউনিয়নে ৫শ’ থেকে ১ হাজার সদস্য নিয়ে কৃষি সমবায় শুরু করি। বিএডিসি সরবরাহকৃত ৭২টি সেচের জন্য লো লিফ পাম্প বসাই, লাইন সুইং ইরি চাষ করি ইত্যাদি। কিন্তুদুর্ভাগ্য আমাদের জাতির জনককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। আমরা আর সফল হতে পারি নি। আমরা ঘাত-প্রতিঘাত দেখে আসছি। লদ্ধ অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন উৎপাদন। আর করোনা প্রতিরোধ ক্ষেত্রে পরীক্ষা। পাশাপাশি আমরা কিন্তু এখনো ৯৮ বা ৯৯ ভাগ আক্রান্ত নই-ঝুঁকিতে আছি। যারা কৃষি খাতে জড়িত তাদের দিয়ে আমাদের গেরিলা কায়দায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। উৎপাদনে এগিয়ে যাই এবং কোন রকম অভাব অনটনে না পড়ি। বাজারে পন্য যেন পর্যাপ্ত থাকে। আমরা করোনা কে জয় করব, উৎপাদনও বাড়াবো। এভাবে আমরা একটা ভারসাম্য দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। রপ্তানিরকারক দেশ হিসেবে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। বাংলাদেশ যেমন একটা দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় হয়েছে ঠিক তেমনি আমরা এ সমস্যা সমাধানে একটি অভ্যুত্থান ঘটাবো উন্নয়নের দিক থেকে।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধি ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ইত্যাদি দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব এ সকল ঝুঁকির মধ্যে থাকা নাগরিকদের গাইড করা, সাবধানতা অবলম্বন করা ও পরামর্শ দেয়া, সামাজিক জ্ঞান দেয়া। এতে তারা মানসিক উৎসাহিত হবেন এবং মনোবল পাবেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ভিজিডি দিয়ে থাকে এবং তাদের নিরাপত্তা বেষ্টনী জাল বিদ্যমান আছে। ৩০ লাখেরও বেশী মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রাপ্ত মা তালিকাভূক্ত আছে যাদেরকে নিয়ে দীর্ঘ এক প্রজন্ম মেয়াদী স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, কর্মসংস্থান এবং পরিবেশ সমন্বিত ‘স্বপ্ন প্যাকেজ’ অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে। মাতৃত্বকালীন ভাতাপ্রাপ্ত মা’দের জানানো যে তাদের কি ধরণের প্রোটেকশন নিতে হবে, কিভাবে থাকতে হবে, কি ধরণের পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, কেন তাদের হাত ধোয়াসহ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অনেক এনজিও এখন মাঠে নামছে। তারা ঝুঁকি সচেতনতা ও প্রোটেকশন বিষয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি তারা উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করুন। উৎপাদন আল্লাহ্’র দান- যা প্রকৃতি। পশ্চিমা দেশগুলোতো প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল নয়। তারাতো প্রকৃতিকে হত্যা করছে। সুতরাং তাদের উপর গজব নামছে। আমরা তাদেরকেও সহায়তা করতে চাই।
ইতোমধ্যে আমাদের সাহসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিসকে চিঠি লিখেছেন এবং সহায়তার কথা ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ বলছেন, আমি তাকেই সাহায্য করি, যে নিজেকে সাহায্য করে যা সূরা রা’দ্ এ আছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বর্তমান সৃষ্ট প্রেক্ষিতে যুগোপযোগি ধ্যান-ধারণা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। করোনা দুর্যোগে নিম্ন আয়, কর্মহীন, কর্মহারা, অসহায়, দিন মজুরসহ যারা সমাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাইরে পড়েছে এদেরকে নিয়ে স্থানীয় সরকার মাধ্যমে ত্রাণ ও দুর্যোগ মোকাবেলা মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে হবে যা কিছুটা শুরু করেছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করতে হবে। ঘরে ফেরা কর্মসূচীকে অর্থবহ ও নীতিবান করা দরকার। কেননা দূর্যোগ, মহামারী, আপদকালে সাধারণ জনগন যেকোন আস্থার উদ্যোগ আমলে নেয়। কৃষি মন্ত্রণালয়কে মাঠে নেমে কৃষি উৎপাদনে ফরওয়ার্ড প্লানিং, স্থানীয় মার্কেটিং সিষ্টেম ডেভেলপ করতে হবে। উৎপাদিত পন্য যেন নষ্ট না হয় বা ফেলে দেয়া না লাগে।
’৭০ এর বন্যা পরবর্তী একটা উদাহরণ দেইঃ এখন বাজারে যে সবজি যেমন লেটুস, বাঁধা কপি, ফুল কপি, গাঁজর, ভূট্টা ইত্যাদি পাওয়া যায়, মানুষ কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ১৯৭০-’৭২ সালে কেউ এগুলো চিনত না বা বাজারে পাওয়া যেত না। খাদ্যাভাস পরিবর্তন লক্ষ্যে সবজি-ভাত আন্দোলন আওতায় তখন আমাদের বিভিন্ন সমবায় প্রর্দশণী খামারে কৃষকেরা এ সকল উৎপাদন করত। তবে তা বাজারে খুব একটা বিক্রি হতো না। কৃষকেরা অভিযোগ করতো যে, ভাই এগুলোতো আপনারা চাষ করতে বললেন, এখন তো বিক্রি হয় না। তখন আমরা তৃতীয় একজনকে দিয়ে বাজার থেকে কিনে নিতাম, কৃষককে উৎসাহ দিয়েছি। এখন অবশ্য সেদিন আর নাই, এগুলোর প্রচুর চাহিদা। খাদ্যাভাস পরিবর্তন হয়েছে। তবে খাদ্যে ভেজাল, মজুদদারী, লোভ-লালসা, দেশ প্রেমহীনতা, আদর্শিক রাজনীতিহারা ও ব্যবসায়িক ঠিকাদার লেজুরী রাজনীতি বেড়েছে।
বর্তমান দূর্যোগ প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কৃষকদরদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমরা অনুসারী। তাঁর বক্তব্যে ‘অধিকার’ শব্দটি বার বার আসছে। শ্রমিক, কৃষক, পিছিয়ে ফেলাদের কথা বলার মত কোনমন্ত্রী/কর্মকর্তা আছে যারা অধিকার নিয়ে কথা বলে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করি আপনি কৃষি, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়কে সজাগ করুন। একই ভাবে মহিলা, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সবাই তাদের নিজ নিজ লক্ষ্যিত জনগনকে নিয়ে দায়িত্ব সহকারে কাজ এগিয়ে নেক। চাষাবাদসহ উৎপাদনমুখী খাত চালু রেখে মাঠে কাজ আর উৎপাদন-ই বর্তমান প্রেক্ষাপটে একমাত্র লক্ষ্য-যা খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে। এটা করতে পারলেই আমরা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ-জয় পাশাপাশি উৎপাদন গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে ধ্বংস থেকে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে একটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ গড়তে পারি। বঙ্গবন্ধু কন্যা এটা পারবেনই। কারন তিনি ‘পদ্মাসেতু নিজের টাকায় করব’ বিশারদ। বঙ্গবন্ধু বলছিলেন যে, আমার ভাগের কম্বলটা কোথায়? উনি বন্টন ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কণ্যার কাছে আবেদন পোষাক শ্রমিকদের মত একইভাবে ৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষুদ্র কৃষিখাতে উৎপাদন প্রনোদনা দিবেন। যাতে তারা উৎপাদনে মালিকানার অংশীদার হতে পারে।
আল্লাহ্’র দান প্রকৃতি। মা-মাটি, মানুষ ও ক্ষেত-খামার ইত্যাদি’র উপর জোর দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মুজিব-বর্ষ স্মরণে বঙ্গবন্ধুর শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়তে সাম্যতা ও ন্যয্যতার একটি বিশাল শিক্ষা আমাদের দ্বারপ্রান্তে। পৃথিবীব্যপী সৃষ্টিকর্তা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-ধনী-গরীব নির্বিশেষে সব এক করে ফেলেছেন। কোথায় এখন কোন মন-চিন্তা-ভাবনার বৈষম্য ও বিভেদ নাই। সব মিডিয়ার একই রকম ভাষা ও সাবধানতা। করোনা বিশ্বকে আপাততঃ এক করে ফেলেছে। তাই গেরিলা উৎপাদন যুদ্ধে আমাদের উন্নয়ন জানালা তৈরী করতে হবে। উন্নয়নের ঘর-বাড়ি-দরজা সৃষ্টি করতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। পৃথিবীটাকে মাথা উঁচু করে আবার দেখিয়ে দেয়ার সময় এখনই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সে আহবান-ই জানিয়েছেন। আল্লাহ্ সহায় হোন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, ডরপ এবং গুসি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার বিজয়ী- ২০১৩। Email: nouman@dorpbd.org