বিডি মেট্রোনিউজ॥প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের চক্রান্তের মামলায় শফিক রেহমানের পর আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কারাবন্দি মাহমুদুর রহমানকেও গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে দণ্ডিত বিএনপি নেতার ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের কাছ থেকে মাহমুদুর রহমানও প্রধানমন্ত্রীপুত্রের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়েছিলেন বলে এই কর্মকর্তার দাবি।
গত বছর সিজারকে দণ্ড দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের দেওয়া রায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলের ক্ষতি করার লক্ষ্যে তার ব্যক্তিগত তথ্য পেতে আসামি এফবিআইয়ের এক এজেন্টকে ঘুষ দিয়েছিলেন। ঘুষ দিয়ে তথ্য পাওয়ার পর তা সিজার বাংলাদেশি ‘একজন সাংবাদিককে’ তা সরবরাহ করেছিলেন এবং বিনিময়ে ‘প্রায় ৩০ হাজার ডলার’ পেয়েছিলেন বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায়ের পর জয়কে অপহরণের চক্রান্তের অভিযোগ তুলে ঢাকার পল্টন থানায় পুলিশ একটি মামলা করে, যাতে সিজারের বাবা প্রবাসী বিএনপি নেতা মেহম্মদ উল্লাহ মামুনসহ দলটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দকেও আসামি করা হয়।
শফিক রেহমানকে ওই মামলায় গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালে এই সাংবাদিক বিদেশ সফরের সময় ওই ‘ষড়যন্ত্রকারীদের’ সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছিল। মনিরুল বলেন,“এই ঘটনায় শফিক রেহমানের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে।”
ভিন্নমতের বলেই শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিএনপি দাবি করলেও ‘ভিকটিম’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে সিজারের মামলায় সাক্ষ্য দিয়ে আসা জয় বলছেন, শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
এই তদন্তের আওতায় আরও অনেককে আনা হচ্ছে জানিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, কারাগারে থাকা মাহমুদুর রহমানকেও এই ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।”
খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মাহমুদুর আমার দেশের মালিকানা কিনে সম্পাদক বনে যাওয়া প্রকৌশলী মাহমুদুর ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলার সঙ্গে এটিও যোগ হতে যাচ্ছে।
মনিরুল বলেন, “মাহমুদুর রহমান একজন মানুষের (জয়) গতিবিধি, তার কর্মক্ষেত্র, পরিবারের সদস্যরা কখন কোথায় কী করছে এই সংক্রান্ত প্রাথমিক তথ্য পেয়েছিলেন মিল্টনের থেকে। এটি একজন মানুষকে অপহরণ করার জন্য যথেষ্ট।”
২০১৩ সালের অগাস্টে গ্রেপ্তার সিজার তার বন্ধু মিল্টন ভূইঞার মাধ্যমে ওই সব তথ্য ঢাকায় মাহমুদুরকে পাঠিয়েছিলেন বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান। এই ঘটনার তদন্তে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত এবং মামলার তদারক কর্মকর্তা মাশরুকুর রহমান খালেদকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে। বিদেশে থাকা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনকেও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানান মনিরুল।
বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটের ফেয়ারফিল্ড কাউন্টিতে বসবাস করছেন।