বিডি মেট্রোনিউজ, রংপুর ॥ বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ইকরচালিতে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে সাইমন পরিবহন ও তৃপ্তি পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত ও অন্তত ৫৪ জন আহত হয়েছে।
রংপুরের তারাগঞ্জে ১৩ যাত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী দুই বাসের একটির চালক ঘুমের ঘোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে এক যাত্রী অভিযোগ করেছেন। সাইমন পরিবহন নামের ওই বাসটি আগেও কয়েকবার একটুর জন্য দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায় বলে দাবি করছেন ওই যাত্রী।
সায়মন পরিবহনের যাত্রী ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া এলাকার কবিরুল ইসলাম দুর্ঘটনায় সামান্য আহত হন। তিনি বলেন, “আমি ঠাকুরগাঁওয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকার সায়েদাবাদে সায়মুনে পরিবহনে উঠে চালকের পাশে ইঞ্জিনের উপর বসি। কিছুক্ষণ পর দেখতে পাই চালক ঘুমে টলছেন। যাত্রীরা তাকে গাড়ি থামিয়ে চোখে পানি দিতে বলেন।”
ঢাকা থেকে রংপুর আসার পথে গাজীপুর, বগুড়া ও রংপুর শহরে গাড়ি থামিয়ে তিনি তিনবার চোখে পানি দেন বলে জানান কবিরুল। এছাড়া চালক গাড়িটি দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিলেন বলেও অভিযোগ কবিরুলের।
তিনি আরও বলেন, তারাগঞ্জের ইকরচালি বাজার অতিক্রম করার পর বিপরীত দিক থেকে আসা তৃপ্তি পরিবহনের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে বিকট শব্দে দুটি বাসই দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
“আমি বাইরে ছিটকে পড়ি। এরপর আর কিছু মনে নেই। পরে দেখতে পাই আমি তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুইয়ে আছি। আমার হাত ও পায়ের চামড়া ছিলে গেছে।”
আরও কয়েকজন যাত্রীর বরাত দিয়ে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মহিতুল ইসলাম বলেন, সায়মনের চালক ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। সেই সঙ্গে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে গাড়িটি তৃপ্তি পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
তৃপ্তি পরিবহনের চালক আহত হলেও সায়মনের চালক আহত হয়েছেন নাকি পলাতক রয়েছেন তা জানা যায়নি। গাড়ি দুটির ছাদ যাত্রীভরতি ছিল বলেও জানান ওসি মহিতুল।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আট জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন, সায়মন পরিবহনের চালকের সহকারী আকুল মিয়া (২৬), তৃপ্তি পরিবহনের চালকের সহকারী চন্দন রায় (২৫), নীলফামারীর সৈয়দপুরের খাতামধুপুর ইউনিয়নের পাশারীপাড়া গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে কৃষি শ্রমিক মোহাম্মদ আলী কালা মিয়া (৪৫), সাবেদ আলীর ছেলে কৃষি শ্রমিক আব্দুল মতিন (৪০), লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার মধ্যগুড্ডিমারী গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক একাব্বর আলী (৬৫), নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার লিটন মিয়া (২২), ডোমার উপজেলার মিজানুর রহমান (৪০) এবং তারাগঞ্জের ইকরচারী ফারুকিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক জিন্নাত রেহেনা (৩৫)।