দেশের সবচেয়ে বড় চুনাপাথরের মজুদ!

বিডি মেট্রোনিউজ দেশের ‘সবচেয়ে বড়’ চুনাপাথরের মজুদ পাওয়ার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলছেন, বাণিজ্যিক উত্তোলন লাভজনক প্রমাণিত হলে ওই খনি থেকেই দেশের সব সিমেন্ট কারখানার চাহিদা মেটানোর মতো চুনাপাথর পাওয়া যাবে।

নওগাঁ জেলার বদলগাছির তাজপুর গ্রামে প্রায় ৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভূপৃষ্ঠের ২ হাজার ২১৪ ফুট গভীরে শুরু হয়েছে চুনাপাথরের স্তর। ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর শিগগিরই সেখানে সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করবে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই সাংবাদিকদের নিজের কার্যালয়ে ডেকে তিনি বলেন, “আমরা একটা সুখবর আপনাদেরকে দিতে চাই, কিছুক্ষণ আগে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চুনাপাথর খনি আবিষ্কৃত হয়েছে।”

সেখানে চুনাপাথরের স্তর শুরুর পর ৬১ ফুট পর্যন্ত এরইমধ্যে খনন হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ড্রিলিং অব্যাহত রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আরও অনেক পুরু হবে এই স্তর।”

এই খনি থেকে চুনাপাথর উত্তোলন বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হবে কি না- সেই সম্ভাব্যতা যাচাই করতে দেড়-দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে নসরুল হামিদ জানান। তিনি বলেন, লাভজনক বিবেচিত হলে এরপর বাণিজ্যিক উত্তোলনের পদক্ষেপ নেবে সরকার।

এই আবিষ্কারের বিপুল সম্ভাবনার দিকটি তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই খনি থেকে উৎপাদন সম্ভব হলে বাংলাদেশের কোনো সিমেন্ট কারখানাকে আর চুনাপাথর আমদানি করতে হবে না।

“অর্থাৎ, হাজার কোটির বেশি টাকার চুনাপাথর আমরা ব্যবহার করতে পারব। এটা নির্ভর করছে, এটা বাণিজ্যিকভাবে ভায়াবল হবে কি-না। ফিজিবিলিটি স্টাডি করলে সেটা বোঝা যাবে।”

দেশে ত্রিশটির বেশি সিমেন্ট কারখানা বছরে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় দুই কোটি টন সিমেন্ট। এসব কারখানার কাঁচামালের বেশিরভাগ চাহিদা মেটানো হয় ক্লিংকার আমদানি করে। আর লাফার্জ মেঘালায় থেকে সরাসরি পাথর আমদানি করে।

কাদামাটির সঙ্গে চুনাপাথর মিশিয়ে কারখানায় পুড়িয়ে তৈরি হয় ক্লিংকার। বদলগাছি নিয়ে প্রত্যাশা পূরণ হলে ক্লিংকার আমদানির বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে বলে সরকার আশা করছে।

ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেহাল উদ্দিন বলেন, “ড্রিলিংয়ে যে নমুনা আমরা পেয়েছি, তার মান আমাদের খুবিই ভালো মনে হয়েছে। আরও খননের পর মজুদের পরিমাণ সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যাবে। তবে এ পর্যন্ত যে ধারণা আমরা পেয়েছি, তা আগের যে কোনো খনির তুলনায় বড়।”

প্রতিমন্ত্রী জানান, ষাটের দশকে জয়পুরহাটে চুনাপাথরের খনি আবিষ্কৃত হলেও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক না হওয়ায় তা আর তোলা যায়নি।

“এর মধ্যে অনেক প্রযুক্তি এসেছে। আমি ওই এলাকা পরিদর্শন করে আবার ফিজিবিলিটি স্টাডি করতে বলেছি। আমরা চেষ্টা করছি, সেটাকে আবার পরীক্ষা করে শুরু করার জন্য।”

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts