এ খান ॥ খাদ্য মন্ত্রনালয় চার মাসেও নির্ধারন করতে পারেনি ওএমএস এবং গ্রামীন জনগোষ্ঠীর জন্য পল্লী রেশনিংয়ের চালের দাম। বাজারদর অপেক্ষা কম মূল্যে চাল সরবরাহের সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম তারা আজও শুরু করতে পারেনি।
এই চাল খোলা বাজারে, পল্লী রেশনিং এ বিক্রি নাও হতে পারে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে এবং খাদ্য মন্ত্রীকে নতুন করে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে- এসব দিক ভেবেই মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে দ্বিধায় রয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দুই শতাধিক সিএসডি, এলএসডিতে প্রায় দশ লক্ষ মেট্রিক টন চাল রয়েছে। এরমধ্যে আড়াই লক্ষাধিক মে. টন চাল মানসম্পন্ন নয়। এর মধ্যেও প্রায় পঁচিশ হাজার মে. টন চাল খাওয়ার অযোগ্য হয়ে গেছে। মন্ত্রণালয় এই চাল পল্লী রেশনিং এর নামে ও ওএমএস এ বিক্রি করতে চাচ্ছে।
আবারঅপেক্ষাকৃত কিছুটা ভাল অবস্থায় থাকা প্রায় পঞ্চাশ হাজার মেট্রিক টন চালও দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব চালেরও একটা অংশ এরিমধ্যে খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিন-চার মাস আগেই এইসব চাল সরিয়ে নেয়ার জন্য খাদ্য অধিদপ্তর থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তহীনতায় গুদাম থেকে এসব চাল সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি।
এতে করে গুদামে এইসব চাল অধিক পরিমাণে বিনষ্ট হয়েছে। সংসদ সদস্যরা চালের পরিবর্তে নগদ টাকা নিচ্ছেন। বাজারে চালের দাম কম এবং নিম্নমানের চাল মানুষ নেবেনা বলে তারা টাকা নিচ্ছেন। দাম নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের অস্বাভাবিক সময় ক্ষেপনে চাল বিক্রিও করতে পারছেনা অধিদপ্তর।
সরকার দশ টাকা কেজিতে মানুষকে চাল খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংসদ নির্বাচনের আগে। চালের উৎপাদন ও সরবরাহ পরিস্থিতি ভাল এবং অব্যাহতভাবে স্থিতিশীল থাকায় দামে উল্লেখযোগ্য হেরফের হচ্ছেনা না। কয়েক মাস আগেও খাদ্য মন্ত্রণালয় ন্যয্যমূল্যে খোলাবাজারে ওএমএস কার্যক্রম চালু করেছিল। কিন্তু চাল বিক্রি হয়নি।
ক্রেতা সাধারণ বাজার থেকে অপেক্ষাকৃত ভাল মানের চাল কিনতেই অধিকতর আগ্রহী। এখন দাম কমিয়ে বিক্রি করতে গেলেও এই চাল মানুষ কিনবে কিনা সংশয় রয়েছে।
ঢাকাসহ শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে চাল হৃাসকৃত মূল্যে অধিক পরিমাণে বিক্রির কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। আগামী মাস থেকে এই কার্যক্রম শুরু করার চিন্তা করা হচ্ছে। দাম কমিয়ে কেজি প্রতি চৌদ্দ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব রয়েছে। একইদামে শহরাঞ্চলে ওএমএস- এ চাল বিক্রি করা হবে। কিন্তু গুদামের বিনষ্ট নিম্নামানের চাল বিক্রি নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় হৃাসকৃত মূল্যে চাল বিক্রির পরিকল্পনা ও থমকে আছে।