বিডি মেট্রোনিউজ ॥ হিসাব অনুযায়ী চলতি মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ তাপপ্রবাহটি বয়ে যাচ্ছে। ৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে টানা ২৩ দিন ধরে দাবদাহটি দেশের বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এপ্রিলে সাধারণত যে গড় তাপমাত্রা থাকে, এখন তাপমাত্রা তার চেয়ে সারা দেশে ৫ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
এই দাবদাহের দাপটে মানুষ তো বটেই, সড়কপথে যানবাহনও যেন ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। ঠা ঠা রোদ আর হাঁসফাঁস গরমের কারণে দুপুরের দিকে রাজধানীর বেশির ভাগ সড়ক বেশ ফাঁকা হয়ে যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিলে সাধারণত এক থেকে দুটি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়, যা সর্বসাকল্যে ছয় থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়। এর আগে ১৯৯৫ সালে দেশের ১২টি জেলায় ঘুরেফিরে আট দিন দাবদাহ ছিল। এরপর ২০০৭ সালে সাতটি জেলায়, ১৯৯৯ ও ২০০৯ সালে ছয়টি জেলায় পাঁচ থেকে ছয় দিন দাবদাহ বয়ে গেছে। কিন্তু টানা ২৩ দিন দাবদাহ চলতে দেখা যায়নি।
আর বৃষ্টিপাতের হিসাব নিতে গেলে এই বঙ্গীয় ব-দ্বীপের বেশির ভাগ মানুষের কপালে বঞ্চনার তথ্যই মিলবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, এপ্রিলে সারা দেশ মিলিয়ে ১৬৬ দশমিক ৩ মিলিমিটার ও ঢাকায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।
এ বছরের এপ্রিলে ঢাকায় বৃষ্টির পরিমাণ হিসাব করলে ৩ থেকে ৫ মিলিমিটারের বেশি হবে না। তাও রাজধানীর উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের দু-একটি এলাকায় ঝরেছে।
এবারের এপ্রিলের হাওয়ার গতি-প্রকৃতির হিসাব নিলে অবশ্য হতাশা আরও বাড়বে। কালবৈশাখীর এই মাসে এখনো ঝোড়ো হাওয়ার দেখাই পায়নি রাজধানী বা দেশবাসী কেউই। মাঝে মাঝে যে দমকা হাওয়া এসেছে, তার সঙ্গে ভেসে এসেছে জলীয় বাষ্প। এতে বাতাসের তাপ পরিবহনক্ষমতা গেছে বেড়ে। ফলে কালবৈশাখীর কারণে গ্রীষ্মের খরতাপে যে কিছুটা বিরতি পড়ে, তাও এবার হয়নি।
ফলে সব মিলিয়ে এবারের বৈশাখকে গত ৩০ বছরের মধ্যে বিশেষ ব্যতিক্রম হিসেবেই বলছেন আবহাওয়াবিদেরা।