সিঙ্গাপুর ও ঢাকায় ‘উগ্রপন্থী’ সন্দেহে আটক ১৩

বিডি মেট্রোনিউজ সিঙ্গাপুরে চাকরি করতেন এমন ১৩ জন বাংলাদেশীকে গত কয়েকদিনে উগ্রপন্থী কার্যকলাপের অভিযোগে ঢাকা ও সিঙ্গাপুর থেকে আটক করা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি

এই ১৩ জন বাংলাদেশীকে প্রথমে সিঙ্গাপুরেই আটক করে সেদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পর আজই ঢাকার বনশ্রী এলাকা থেকে তাদের আটক করে বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি উগ্রপন্থী সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল।

এর আগে সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা এপ্রিল মাসে আট জন ‘উগ্রপন্থায় দীক্ষিত হওয়া’ বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করেছে। তারা ‘ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ’ (আইএসবি) নামে একটি গোপন গোষ্ঠীর সদস্য। এছাড়া বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠানো পাঁচ জন আইএসবির সাথে সংশ্লিষ্ট না হলেও তাদের কাছে জিহাদি বইপত্র ছিল।

সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মাহবুব উজ-জামান বিবিসিকে বলেন, এদের ব্যাপারে সিঙ্গাপুরে পুলিশের চালানো অনুসন্ধানের সময় বাংলাদেশের দিক থেকে সবরকম সহযোগিতা করা করা হয়।

আটককৃতদের নাম রহমান মিজানুর(৩১), মামুন লিয়াকত আলি(২৯), সোহাগ ইব্রাহিম(২৭), মিয়া রুবেল(২৬), জামান দৌলত(৩৪), ইসলাম শরিফুল(২৭), মোহাম্মদ জাবাথ কায়সার হাজী নূরুল ইসলাম সওদাগর(৩০), সোহেল হাওলাদার ইসমাইল হাওলাদার(২৯)। এদের মধ্যে রহমান মিজানুরই ২০১৬ সালের মার্চ মাসে আইএসবি প্রতিষ্ঠা করে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এতে বলা হয়, আইএসবির এই সদস্যরা বিদেশি যোদ্ধা হিসেবে আইসিসে যোগ দিতে ইচ্ছুক ছিল।

কিন্তু সিরিয়ায় যাওয়া কঠিন হবে বলে তারা পরিকল্পনা করে যে তারা বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে সেখানকার নির্বাচিত সরকারকে সশস্ত্র পন্থায় উৎখাত করে একটি ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং তাকে আইসিসের খেলাফতের অধীনে নিয়ে আসবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় , আটককৃতদের কাছ থেকে ‘আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু’ হিসেবে বাংলাদেশের কিছু সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তার নামের তালিকা, অস্ত্র ব্যবহার ও বোমা তৈরির পদ্ধতি সংক্রান্ত দলিলপত্র এবং উগ্রপন্থী বইপত্র পাওয়া গেছে।

তাদের গ্রেফতারকৃতরা সবাই স্থানীয় বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থাসহ নানা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো। তারা সিঙ্গাপুরে কর্মরত বাংলাদেশীদের মধ্যে থেকে সদস্য সংগ্রহ এবং আগ্নেয়াস্ত্র কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল।

বাংলাদেশে এই গোষ্ঠীটির অন্তত দুজন সদস্য আছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

বাংলাদেশ সহযোগিতা করেছে: হাই কমিশনার

সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মাহবুব উজ-জামান টেলিফোনে বিবিসিকে বলেন, জঙ্গী তৎপরতার ব্যাপারে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে এবং সেকারণেই বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এই গোষ্ঠীটির ওপর নজরদারি এবং তথ্য সংগ্রহের সময় সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা দিয়েছে।

‘তাদের ওপর নজরদারির সময় আমাদের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান হয়েছে, এবং দুদেশের কর্তৃপক্ষ সমন্বিতভাবে এ কাজটি করেছে’ – বলেন হাইকমিশনার।

তিনি আরো জানান, এখন আটককৃত ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরো জানার চেষ্টা চলছে, এর পরই হয়তো তাদের দেশে ফেরৎ পাঠানো হতে পারে।

হাইকমিশনার জানান, এর আগে জানুয়ারি মাস নাগাদ সিঙ্গাপুর থেকে মোট ২৭ জনকে বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts