নিরাপত্তা ইস্যুই প্রধান এজেন্ডা
বিডি মেট্রোনিউজ॥ দু’দিনের সফরে আগামীকাল ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শংকর। সোমবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ভারত সরকারের বিশেষ দূত হিসেবে ঢাকা সফর করবেন জয়শংকর। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ বার্তা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে ভারত সফরে মোদির আমন্ত্রণের কথাও জানাতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ লেখক, ব্লগার, প্রকাশক, শিক্ষক হত্যার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকার বার্তা পাঠাতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে জয়শংকর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এ বৈঠকে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা হতে পারে। এ ছাড়া সরকারের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি। জয়শংকরের এ সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিই বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
সম্প্রতি রাজধানীর কলাবাগানের বাসায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন। এ ঘটনার পর গত ৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল ঢাকায় তিন দিনের সফর করেন।
সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। সফরকালে নিশা বিসওয়াল ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সবাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এ কারণে আমরা নিজেদের মধ্যে নোটের আদান-প্রদান করি।
সফর শেষে ৮ মে দেশে ফিরে এক টুইটে নিশা বিসওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশে ফলপ্রসূ সফর শেষে দেশে ফিরেছি। সেখানে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দমনে সহযোগিতার ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।’
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের পরপরই বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও দ্বিপক্ষীয় পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব। তাই এ সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের পদ থেকে সুজাতা সিংকে সরিয়ে জয়শংকরকে নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর পাঁচ সপ্তাহের মাথায় ২ মার্চ এক দিনের সফরে ঢাকায় আসেন তিনি। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক গত ফেব্র“য়ারিতে দিল্লি সফরে গিয়ে জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সময় দু’দেশের মধ্যে সমুদ্রসম্পদ বিশেষ করে নীল অর্থনীতি নিয়ে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। তারা এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেন। তার আলোকে সোমবার ঢাকায় নীল অর্থনীতিবিষয়ক একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।