ডি‌মের দাম হা‌লিতে ৫০ টাকা অতিক্রম

তেল, চিনি, চাল, ডাল, মুরগি, সবজির পর এবার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ডিমের দাম। প্রোটিনের উৎস ডিমও এখন অনেক দামি পণ্যে পরিণত হয়েছে। ডিমের দাম হালিতে বেড়েছে কমপক্ষে ১০ টাকা। ৪০ টাকা হালির মুরগির ডিম (লাল) ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।

শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে খুচরো দোকানে লাল ডিমের ডজন যেখানে ১১৫ থেকে ১২০ টাকার বিক্রি হয়েছে, সেই ডিমের ডজন আজ ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। আর হালিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। আজকের বাজারে একটি ডিমের দাম পড়ছে প্রায় ১৩ টাকা। অপরদিকে, পাইকারি বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। আর প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৪ টাকায়।

অন্যদিকে, মুরগির ডিমের পাশাপাশি বেড়েছে হাঁসের ডিমের দামও। হাঁসের ডিমের প্রতি ডজন ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। প্রতিটি হাঁসের ডিম ১৫ থেকে ১৬ টাকা দিয়ে একজন ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে।

ডিমের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং অনেক খামার বন্ধ হয়ে মুরগি ও ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়া।

নিউমার্কেটের একজন ডিম বিক্রেতা বলেন, পরিবহন খরচের পাশাপাশি ডিমের দাম বাড়ার প্রধান কারণ- অনেকে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই, প্রতিদিনের ক্রেতা চাহিদার চেয়ে ডিমের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বাড়ছে। ভবিষ্যতে ডিম ও মুরগির দাম আরও বাড়বে বলেও আশংকা করছেন এই ব্যবসায়ী।

হাতিরপুলের ব্যবসায়ী রহমান বলেন, প্রতিদিনই ডিমের দাম বাড়ছে। দাম বাড়ার পরও বিক্রি তেমন কমেনি, বরং বেড়েছে। কারণ বেশি দামের কারণে মানুষ মাছ, মাংস, মুরগি কিনতে পারছে না। ফলে ডিমের ওপরই তাদের ভরসা। আরও বাড়তে পারে- এই আশংকায় মানুষ একটু বেশি করেই ডিম কিনছে। মহল্লার দোকানের চেয়ে বাজারে ডজনে ৮ থেকে ১০ টাকা কম, তাই মানুষ বাজার থেকে কিনছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মহল্লার অনেক দোকানি অতিরিক্ত দামের কারণে তারা ডিম রাখছেন না। কারণ হিসেবে সেন্ট্রাল রোডের মুন জেনারেল স্টোরের মালিক পিয়াল হাসান বলেন, আমাদের সব কাস্টমার মহল্লার এবং পরিচিত। প্রতিদিন ডিমের দাম বাড়ছে, একেক দিন একেক দাম চাইলে তারা বিরক্ত হন। সে কারণে গত ২-৩ দিন ধরে দোকানে ডিম রাখছি না। বাজারে দাম কমলে রাখবো।

কারওয়ান বাজারের ডিমের পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকাসহ দেশের ডিমের চাহিদার অর্ধেকেরও বেশি ডিম ও মুরগি আস গাজীপুর থেকে। গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের খামারি ছিলেন ৪ হাজারেরও বেশি। গরমে মুরগি মরে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে লোকসানের মুখে অনেকে খামার বন্ধ করে দেন। যারা চালু রেখেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পোল্ট্রি খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে তাদের অনেকেও খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন।

Print Friendly

Related Posts