কোনো গ্রাহকের অননেটে কলড্রপ হলে এখন থেকে তিনগুণ ক্ষতিপূরণ পাবেন। একই অপারেটরে কল করার (অননেট) ক্ষেত্রে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে কলড্রপ হলে গ্রাহক মিনিট হিসাবে ৩০ সেকেন্ড ফেরত পাবেন। আজ ১ অক্টোবর থেকে চালু হচ্ছে এ নিয়ম।
ফেরত টকটাইম ব্যবহারের আগে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে আর কোনো টাকা কেটে নেওয়া যাবে না। টক টাইম ফেরত দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অপারেটর গ্রাহক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা জানিয়ে দেবে। আর গ্রাহক ওই টকটাইম ব্যবহারের সময় পাবেন ১৫দিন।
মোবাইল ফোনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সংঘটিত কলড্রপ এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষতিপূরণ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে গত ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক নতুন নির্দেশিকার মাধ্যমে এসব তথ্য জানায়।
বিটিআরসির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোবাইল ফোনের কলড্রপের বর্তমান পরিস্থিতিও তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, গত মে মাসের ৩১ দিনে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের মোট অননেট কলড্রপ হয়েছে ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩২টি। গ্রামীণফোনের কলড্রপ হয়েছে ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৬২ হাজার ৮৪৫টি, রবির হয়েছে ৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৮ হাজার ১৫৬টি এবং বাংলালিংকের ৭১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩১টি।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বক্তব্য রাখেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং সচিব খলিলুর রহমান এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
বিটিআরসির জানায়, ১ অক্টোবর থেকে গ্রাহক আগের দিন, সপ্তাহ ও মাসের কলড্রপের সংখ্যা জানতে পারবেন। *১২১*৭৬৫# নম্বরে ডায়াল করে এই তথ্য জানা যাবে। ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রথম ও দ্বিতীয় কলড্রপের ক্ষেত্রে তিনটি পালস (৩০ সেকেন্ড) ও পরবর্তী তৃতীয় থেকে ৭ম কলড্রপের ক্ষেত্রে আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে চারটি পালস গ্রাহককে ফেরত দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জবাবদিহিতা এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে সব মোবাইল অপারেটর অভিন্ন ইউএসএসডি কোড (*১২১*৭৬৫#) ব্যবহার করে গ্রাজককে কলড্রপের সংখ্যা জানাবে। এতদিন একজন গ্রাহকের তার কল কী পরিমাণ ড্রপ হয়েছে, তা জানতে পারতেন না। এখন নির্দিষ্ট কোড ডায়াল করে তা জানা যাবে।
তবে এসব সিদ্ধান্ত অফনেট বা এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরের কলের ক্ষেত্রে নয়। অফনেট কলড্রপের ক্ষতিপূরণও যাতে গ্রাহক পেতে পারেন সেজন্য কাজ করছে বিটিআরসি।
অফনেট কলড্রপের ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসিকে জানিয়েছে, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, বিদ্যুৎ চলে যাওয়া, এনটিটিএন অপারেটরদের ফাইবার অপটিক ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কে সমস্যা, নেটওয়ার্ক বুস্টার ও জ্যামারসহ আরো কিছু বিষয় যুক্ত রয়েছে। মোবাইল ফোন অপারেটররা একা এর দায়-দায়িত্ব নিতে পারে না।
বিটিআরসিও বলেছে অফনেট কলড্রপের ক্ষেত্রে প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী যেকোনো অপারেটরের কারিগরি সীমাবদ্ধতার কারণে কলড্রপ হতে পারে। এ ছাড়া নানা অংশীজন থাকায় অফনেট কলড্রপের মূল কারণ বের করার বিষয়টি জটিল। তবে বিটিআরসি ‘টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম’ বা টিএমএস প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যেখানে অফনেট কলড্রপের কারণ শনাক্ত করা সহজ হবে এবং দায়ী অপারেটরকে দায়বদ্ধতায় আনতে পারবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, ‘আমরা তরঙ্গ বরাদ্দ দিয়েছি। টাওয়ার শেয়ারিং নিয়ে কাজ করছি। এখন একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের টাওয়ার অন্য অপারেটর শেয়ার করতে পারবে। কলড্রপ ৫ শতাংশের নীচেও আমি সহ্য করতে চাই না। কলড্রপ শূন্যে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এটি দশমিক পাঁচের নিচে রাখবই। ’