‘রুল অব ল’ প্রোগ্রাম, জিআইজেড বাংলাদেশ-এর কারিগরি সহায়তায় ও জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিএমজেড) এবং ব্রিটিশ সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এর অর্থায়নে বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর ও আহ্ছানিয়া মিশনের যৌথ আয়োজনে কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চার দিন ব্যাপি ‘জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) ফরিদপুর জেলা কারাগারের প্রশিক্ষণ কক্ষে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ফরিদপুর জেলা কারাগারের ৭ জন এবং যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার, ঝিনাইদাহ, রাজবাড়ী, মাগুরা ও গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ১ জন করে মোট ১২ জন কারা কর্মকর্তা/কর্মচারী অংশগ্রহণ নেয়। এছাড়াও উক্ত প্রশিক্ষণে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের মাদক নিরাময় কেন্দ্র হতে ৩ জন কর্মী অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুর জেল সুপার মোঃ আল-মামুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘রুল অব ল’ প্রোগ্রামের সেন্টেন্স প্লানিং অফিসার খান মোহাম্মদ ইলিয়াস, জেপিআরপিএইচআরপিসি প্রকল্পের সমন্বয়কারী আইয়ুব খান।
এসময় জেল সুপার মোঃ আল-মামুন জিআইজেড ও ঢাকা আহছানিয়া মিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কারাগারে সেবার মান বৃদ্ধিতে এই ধরনের জীবন দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। কারাগারের সেবার মান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর; তাই কারা অধিদপ্তর কারাগারে যে সেবামূলক কাজ করছে ইহাকে আরও কার্যকর ও বেগবান করার জন্য এ ধরণের প্রশিক্ষণ আয়োজনের কোন বিকল্প নেই। তিনি অংশগ্রহণকারীদেরকে অত্যন্ত মনোযোগ ও যত্ন সহকারে প্রশিক্ষণটি গ্রহনের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
জিআইজেড প্রতিনিধি খান মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, বাংলাদেশের কারাগারসমূহ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও বন্দিদের উন্নয়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এবং জিআইজেড এই কাজে কারাগারের সাথে অনেক বছর যাবৎ সম্পৃক্ত হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি আরও বলেন এই প্রশিক্ষণটি প্রকৃত অর্থে অন্যান্য সাধারণ প্রশিক্ষনের মত নয়। যেহেতু, অংশগ্রহণকারীবৃন্দ (ভবিষ্যৎ প্রশিক্ষক) নিকট ভবিষ্যতে অনুরূপ প্রশিক্ষণ কারাগারের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মীর মাঝে প্রদান করবেন, তাই অংশগ্রহণকারীবৃন্দ যাতে করে অত্যন্ত মনোযোগসহকারে প্রতিটি সেশনের পাঠ গ্রহন করেন এবং প্রশিক্ষকের নির্দেশনাসমূহ সঠিকভাবে লালন-পালন করেন। তবেই অংশগ্রহণকারীবৃন্দ এক-এক জন দক্ষ জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষক হিসেবে নিজেকে তৈরী করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ফলশ্রুতিতে, কারাগারের দক্ষ কর্মী বাহিনীদের দ্বারা কারাগার প্রকৃত অর্থেই সংশোধনাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এবং কারাগারের রুপকল্প ‘রাখিব নিরাপদ, দেখাবো আলোর পথ’ বাস্তবিক অর্থেই প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি কারা অধিদপ্তরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিশেষ করে কারা মহাপরিদর্শক, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক, এআইজি-প্রশিক্ষণ ও ক্রীড়া, এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশসহ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য উল্লেখ করে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী আইয়ুব খান বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষনার্থীরা নিজেরাই একজন দক্ষ জীবন দক্ষতামূলক প্রশিক্ষক হিসেবে নিজেকে গড়তে পারবেন এবং উক্ত প্রশিক্ষণলব্দ জ্ঞান তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে প্রয়োগ করতে পারবেন।
প্রশিক্ষণটিতে জীবন দক্ষতা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক এবং রিসোর্স পার্সন হিসেবে অধিবেশন পরিচালনা করেন রুল-অফ-ল প্রোগ্রামের সাবেক ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর আবুল কালাম মোঃ সাইফুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ সেলিম হোসেন।
এছাড়া প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষক হিসেবে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অধিবেশন পরিচালনা করেন খান মোহাম্মদ ইলিয়াস ও আইয়ুব খান। প্রশিক্ষণে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের কর্মীবৃন্দ।
সূত্র: তরিকুল ইসলাম, এ্যাডভোকেসি অফিসার, কমিউনিকেশন স্বাস্থ্য সেক্টর, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন