গৌরব ও অহংকারের দিন

আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের ৫১ বছর পেরিয়ে এসেছে জাতি।৫১ বছর আগে একসাগর রক্তের বিনিময়ে এই ১৬ ডিসেম্বরে এসেছিল বাংলার স্বাধীনতা। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই দেশে উদিত হয়েছিল নতুন এক সূর্য। সে সূর্যের কিরণে লেগে ছিল রক্ত দিয়ে অর্জিত বিজয়ের রং। সেই রক্তের রং সবুজ বাংলায় মিশে তৈরি করেছিল বাংলার লাল-সবুজ পতাকা।

যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ই মার্চ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে জাতিকে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন, সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই পরাজয় মেনে নিয়ে মাথা নত করে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য অস্ত্র সমর্পণ করেছিল বাঙালি জাতির বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরব ও অহংকারের দিন। দীর্ঘ ৯ মাস বিভীষিকাময় সময়ের পরিসমাপ্তির দিন। লাখ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধার রক্তস্রোত, স্বামী-সন্তানহারা নারীর অশ্রুধারা, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা আর বীরাঙ্গনাদের সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে অর্জিত হয়েছিল মহান এই বিজয়। ৫১ বছর আগে এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছিল আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ’৫২-র ভাষা আন্দোলন, ’৬৬-র ৬-দফা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭১-এর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫শে মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহিদ ও ২ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসেবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির দিন আজ।

মহান বিজয় দিবসে উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts