অদিত্য রাসেল: বঙ্গবন্ধু সেতু ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। এবার উত্তাল যমুনার বুকে বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে নির্মিত হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ মেগা প্রকল্প বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু।
ইতোমধ্যে এই সেতুর ৫৮% নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সহস্রাধিক দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর রাত-দিন পরিশ্রমে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এই নির্মাণ যজ্ঞ।
ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই সেতুর কাজ শেষ হলে ১২০ কিলোমিটার গতিতে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। এতে মানুষের যাতায়াত যেমন সহজ হবে তেমনই উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ খুলবে সম্ভাবনার নানামুখী দুয়ার।
প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, শেখ বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ৫০টি পিলারের ওপর বসবে ৪৯টি স্প্যান। ইতোমধ্যে ২২টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। আর স্প্যান বসেছে ১৩টি। সবমিলিয়ে প্রকল্প কাজের ৫৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটির নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর সাব-স্ট্রাকচার প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান খান জানান, এখন পর্যন্ত ২২টি পিলার হেডের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গুণগত মান নিশ্চিত করে সাব-স্ট্রাকচারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
রেল সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল-ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণ হচ্ছে। কাজের গতি যথেষ্টই সন্তোষজনক। ইতোমধ্যে রেল সেতুর প্রকল্পের ৫৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। এই ভাবে কাজের গতি অব্যাহত থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সেতুটি উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।
সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট আবু ইউসুফ সূর্য বলেন, যমুনার বুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতু নির্মাণের মাধ্যমে আমরা নতুন আশার আলো দেখছি। কেননা ট্রেনে মালামাল বহন অনেকটা সহজ ও সাশ্রয়ী। এতে সিরাজগঞ্জ ও
উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই রেলসেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। জাপান এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে রেলসেতু প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করছে জাইকা। কাজের গতি অব্যাহত থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেতুটি উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।