সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিন ব্যাপী নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোটগ্রহণ বুধবার শুরু হয়নি। এ দিন আওয়ামীপন্থীদের সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হইচই, হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনের (ভোটকেন্দ্র) ভেতরে আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনীত সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুসের সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির একজন সদস্যের কথা-কাটাকাটি চলে। অন্যদিকে উপকমিটির পক্ষ থেকে বারবার প্রার্থীদের নির্ধারিত জায়গায় যেতে বলা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আইনজীবীরা ‘ইয়েস, ইয়েস’ বলে রব তোলেন।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত এক আইনজীবীর সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির। তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেল থেকে এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী।
কিছুক্ষণ পর বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন বলেন, ‘কমিশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নির্বাচন হবে না।’
এ সময় বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা ‘ইয়েস, ইয়েস’ বলে রব তোলেন। এর পক্ষে-বিপক্ষে হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ তা চলে।
উভয়পক্ষের হট্টগোলের সময় সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে পুলিশি অ্যাকশনে দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তারা হলেন, এটিএন নিউজের জাবেদ আক্তার ও আজকের পত্রিকার নূর মোহাম্মদ। চিকিসার জন্য জাবেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রথম দিনের ভোট সকাল ১০টায় শুরু হয়ে দুপুরে ১ ঘণ্টার বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। আগামীকাল বৃহস্পতিবারও ভোটগ্রহণ চলার কথা। সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের এই সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার রয়েছেন প্রায় ৯ হাজার।
ভোট শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার ভোটকে কেন্দ্র করে দিনভর হট্টগোল হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করার পর দু’পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচন পরিচালনার জন্য গত ২ মার্চ যে সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার আহ্বায়ক ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাবেক বিচারপতি মো. মনসুরুল হক চৌধুরী। ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে সোমবার রাতে তিনি পদত্যাগ করেন। দেখা দেয় নতুন জটিলতা। আজ যথারীতি ভোটগ্রহণ শুরু করতে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দু’পক্ষই মঙ্গলবার নতুন দু’জনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করে।
আওয়ামী লীগপন্থীদের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে এবং বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে নির্বাচন কমিশনার ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত বার ভবনে দু’পক্ষের মধ্যে চরম হট্টগোল ও উত্তেজনা চলছিল। মঙ্গলবার সারাদিন দু’পক্ষের মধ্যে আক্রমণ ও টান টান উত্তেজনা থাকায় রাত ৯টার দিকে বার ভবনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।