বান্দরবানে গোলাগুলিতে নিহত ৮

বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে সন্ত্রাসী দুটি গ্রুপের গোলাগুলিতে ৮ জন নিহত হয়েছেন।শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি নিহতদের নাম ও বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেননি। 
 
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাতে রোয়াংছড়ির খানতামপাড়া এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হননি। সকালে স্থানীয়রা ঘর থেকে বের হলে নিহতদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায় আলোচিত কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট এবং ইউপিডিএফের দুটি পক্ষের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে কোনো পক্ষ এ ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেনি। তবে আধিপত্য বিস্তার নিয়েই এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন ওসি আব্দুল মান্নান।
তিনি জানান, মরদেহ দুর্গম এলাকা থেকে উদ্ধার করে রোয়াংছড়িতে আনা হবে। পরে সেগুলো ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে স্থানীয় এক কারবারি প্রাণ হারান। এছাড়া আরও বেশ কয়েকবার ওই এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।   
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, শান্তিচুক্তির পর দীর্ঘদিন পাহাড় শান্ত থাকলেও গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্বের জেরে পার্বত্যাঞ্চলে একের পর এক উত্থান হয়েছে নতুন নতুন আঞ্চলিক দলের। গেল এক দশকে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে জেএসএস সংস্কার, ইউপিডিএফ, ইউপিডিএফ সংস্কার, মগ লিবারেশন পার্টি ও কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠনের। এসব সংগঠনের জঙ্গি কানেকশন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।  
এছাড়া সংগঠনগুলোর সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতী আধিপত্য বিস্তারের জেরে বেড়েছে প্রাণহানি। নিজেদের অন্তর্কোন্দল ও সংঘাতে গেল দুই বছরে পাহাড়ি জনপদ বান্দরবানে ২৩ জনের প্রাণ গেছে। বাড়ছে গুম ও অপহরণের মতো ঘটনা।
 
সম্প্রতি পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন কেএনএফের হামলায় প্রাণ হারান সেনাবাহিনীর এক সদস্য। এর ফলে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাহাড়ের পরিবেশ। এসব কারণে ভয় ও উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন পাহাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা।
Print Friendly

Related Posts