সেফহোমে বাক প্রতিবন্ধী লাভলীর বিয়ে

শিরিন সুলতানা কেয়া: অভিভাবকহীন বাক প্রতিবন্ধী লাভলী খাতুন ১৩ বছর ধরে সেফহোমে। লাভলীকে নীলফামারি থেকে ২০১০ সালে উদ্ধার করেছিলো পুলিশ।

এরপর তাকে রাজশাহীতে মহিলা ও শিশু কিশোরী নিরাপদ হেফাজতিদের আবাসনে (সেফহোম) রাখা হয়। সে থেকেই সেফহোমে বেড়ে ওঠেন লাভলী। এখান থেকেই শনিবার (১৫ এপ্রিল) শুরু করলেন সংসার জীবন।

শনিবার বিকালে রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া এলাকায় অবস্থিত সেফহোম সমাজসেবা অধিদপ্তরের এই সেফহোমে লাভলীর বিয়ের আয়োজন করা হয়। আগের দিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় গায়ে হলুদ। সেফ হোমের ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এই তরুণীর বিয়েতে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেন।

লাভলী খাতুনের বর মহানগরীর বড়বনগ্রাম দুরুলের মোড় এলাকার মো. হাবিব অটোরিকশা চালান। গত দুই বছর আগে তার স্ত্রী মারা গেছেন। তার তিন ছেলে রয়েছে। লাভলীর সঙ্গে বিয়ের দেনমোহর ঠিক করা হয় ১ লাখ টাকা। আত্মীয়-স্বজন না থাকলেও অনেকটা ধুমধামেই লাভলী খাতুনের বিয়ের আয়োজন হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথিসহ প্রায় ১০০ মানুষকে দাওয়াত করা হয়েছিলো সেফহোম থেকে।

বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

জেলা প্রশাসক বলেন, এটি একটি মানবিক কাজ। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ের ব্যবস্থা করার অনুমতি প্রদান করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করার জন্য আদালতে জামিন নিতে হয়েছে। লাভলী খাতুনের সঙ্গে হাবিব পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ হলো। বিয়েতে নিজেরা খুশি বলে জানিয়েছেন তারা। আমরা নিজেরাও খুশি।

এই বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অভিজিত সরকার, রাজশাহী সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাসিনা মমতাজ, সহকারী পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল ফিরোজ, সেফাহোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক লাইজু রাজ্জাক। এছাড়াও বরের পক্ষ থেকে বরযাত্রী এসেছিলেন আরও প্রায় ২০ জন।

সেফাহোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক লাইজু রাজ্জাকসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী বিয়েবাড়ির সাজে সেজেছিলেন। লাইজু রাজ্জাক বললেন, লাভলী খাতুন নিজের সংসারে সুখে থাকবেন এটাই তার আনন্দ।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts