রফিক সরকার: গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমীর গোলাঘাট এলাকায় আবু তালেবের মৎস্য খামারে ধরা পড়েছে বিচিত্র এক মাছ। স্থানীয় জেলে থেকে শুরু করে কেউই এই মাছটি চিনতে পারছে না। কেউ কখনো দেখেননি বলে জানিয়েছেন।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকালে বিচিত্র এ মাছটি ধরা পড়ার খবরে ওই খামারে উৎসুক মানুষ ভিড় করেন।
সেখানে গেলে দেখা যায়, বড় মাছের খামার থেকে পানি সেচে সেটি খননের কাজ চলছে। তীব্র রোদ উপেক্ষা করে খামার পাড়ে মানুষের জটলা। একটি বড় সিলভারের পাতিলে পানিতে জিইয়ে রাখা অদ্ভুত আকৃতির মাছ দেখতে কৌতুহলী মানুষের ভিড়।
কাছে গিয়ে দেখা গেছে- মাছটির বিশাল আকারের মুখ, শরীরের রং দেখতে কিছুটা কালচে। ঢোরা সাপের মতো গায়ে হলুদ রঙের ছোপ ছোপ দাগ। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত গায়ের রং একই ধরনের। বুকের পাশে রং কিছুটা সাদাটে। চোখের পেছনেই একজোড়া ছোট আকৃতির পাখনা। পুরো মুখ জুড়েই ধারালো ছোট ছোট দাঁতের সারি। শরীর অপেক্ষাকৃত নরম। খুবই শান্ত প্রকৃতির মাছটির ওজন পৌনে দুই কেজি।
খামারটির মালিক আবু তালেব দুই যুগ ধরে মাছের খামারের ব্যবসায় জড়িত।
আবু তালেব বলেন, খামার খনন করার জন্য পানি সেচ দিয়ে অন্যত্র ফেলা হয়েছে। অল্প পানিতে সব মাছ ধরতে জাল ফেলা হয়। জাল টেনে পাড়ে তুলতেই অন্যান্য মাছের সাথে উঠে আসে অদ্ভুত এই মাছটি।
তিনি আরো বলেন, এমন মাছ আমি আর কখনো দেখিনি। বিচিত্র এই মাছটি গ্রামের প্রবীণরাও চিনতে পারছেন না। আমি মাছটি যত্ন সহকারে জিইয়ে রেখেছি। মাছ বিষয়ে গবেষণা করতে চাইলে বিশেষজ্ঞ যে কাউকে এটি আমি দিয়ে দিবো।
ওই গ্রামের ৭০ বছর বয়সী জেলে কবির হোসেন বলেন, মাছটি দেখতে কিছুটা গজার মাছের মতো। তবে এর শরীর একদমই নরম। এমন মাছ আমি আর দেখিনি।
মাছটির ছবি পাঠিয়ে এর পরিচয় জানতে চাওয়া হলে কাপাসিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আশরাফ উল্লাহ বলেন, এটি গবি মাছ বলে মনে হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ বেশ কিছু দেশে এ মাছ পাওয়া যায়। এটা ২৫ থেকে ২৬ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
তবে মাছের ছবি দেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান বলেন, দেখে মনে হচ্ছে এটি বেলে গোত্রের কোন মাছ হতে পারে।