বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ জাপান বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত ৬শ’ কোটি ডলারের আর্থিক সহায়তার প্রদানের অংশ হিসেবে এ বছর দেড়শ’ কোটি ডলার প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, ‘আমাদের সরকার বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত ৬শ’ কোটি ডলার সহযোগিতা প্রদানের অংশ হিসেবে এ বছর দেড়শ’ কোটি ডলার প্রদান করবে।’
জাপানের নাগোয়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী এই সহযোগিতা প্রদানের কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন তিনদিনের সরকারি সফরে জাপানে অবস্থান করছেন। তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র আমন্ত্রণে শিল্পোন্নত দেশসমূহের জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য জাপান আসেন।
শসিবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, ইআরডি’র সিনিয়র সচিব মেজবাহউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বিফিংয়ে বলা হয়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে পদ্মার পাড়ের চর জানাযাত-এ একটি অত্যাধুনিক বিমানবন্দর তৈরীর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়েও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেন।
এছাড়া, জাপান ২০১৯ সালের মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করে দেয়ার বিষয়েও ত্বড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণেও নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকাক্সক্ষার সঙ্গে জাপান অতীতের মতই সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও এসময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে রুলস অব অরিজিন ভবিষ্যতে আরো শিথিল করার বিষয়েও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।
শিনজো আবে বাংলাদেশে উন্নত অবকাঠামো বিণির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, মহেশখালীর মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প এবং ঢাকায় চলমান মেট্রোরেল প্রকল্প সেক্ষেত্রে দুটি বৃহৎ পদক্ষেপ।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শুক্রবার শেষ হওয়া জি-৭ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে নীটওয়্যার রপ্তানীর কিছু ক্ষেত্রে রুলস অব অরিজিন শিথিল করায় জাপানে বাংলাদেশের নীটওয়্যাার রপ্তানীর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে ধন্যবাদ জানান।
পররারাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যেকার এই বৈঠকটি অত্যন্ত উষ্ণ এবং আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকের ফলাফল আশাতীত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ‘বাইব্যাক অ্যারেঞ্জমেন্টে’র মাধ্যমে জাপানের ব্যবসা ও বিনিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি প্রস্তাবকে পর্যালোচনা করে দেখার জন্যও জাইকা কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে ন্যানো প্রযুক্তি, স্কিল ডেভেলপমেন্ট এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি কিছু নতুন বিষয়েও সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।
বৈঠকে গৃহিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন থেকে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীরা জাপানে এ্যারাইভ্যাল ভিসা পাবেন। দুই নেতার বৈঠকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে একযোগে কাজ করার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবার পাশাপাশি জাতিসংঘের প্রয়োজনীয় সংস্কার বিষয়েও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।