এক পোস্টে দেড় লাখ! ইনস্টাগ্রাম থেকেই কোটিপতি নায়িকা, সাফল্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে কিসে? ভারতের বিনোদন জগতের উঠতি তারকা জান্নাত। মাত্র ২১ বছর বয়সে সাফল্যের শিখর ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। ইনস্টাগ্রাম থেকে বিপুল অর্থ রোজগার করে চলেছেন প্রতি দিন। বেড়েই চলেছে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে ছবি এবং ভিডিয়ো অনেকেই পোস্ট করেন। দৈনন্দিন যাপনের ঝলক ভাগ করে নেন পরিচিতদের সঙ্গে। কিন্তু সমাজমাধ্যমে এই ‘সামাজিকতা’ থেকে আয় করেন ক’জন? ফেসবুকে পেজ খুলে নিয়মিত পোস্ট করে অনেকেরই আয় হয়। ইনস্টাগ্রামের ক্ষেত্রেও নিয়মটা একই। সেই কারণেই বিনোদন অথবা ক্রীড়াজগতের তারকাদের সমাজমাধ্যমে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়।
কিন্তু শুধু ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত পোস্ট করেই কোটিপতি হওয়া সকলের কপালে থাকে না। এই প্রতিবেদনে ভারতের বিনোদন জগতের তেমনই এক উঠতি তারকার কথা আলোচিত হবে, যিনি ইনস্টাগ্রাম থেকে বিপুল অর্থ রোজগার করে চলেছেন প্রতি দিন।
জান্নাত জুবের রাহমানী হিন্দি ধারাবাহিকের পরিচিত মুখ। ছোট পর্দায় অনেক ছোট বয়স থেকেই তিনি অভিনয় করছেন। কিশোরী জান্নাতের অভিনয় অনেকেই মনে রেখেছেন। বর্তমানে তিনি ২১ বছরের তন্বী নায়িকা।
২০০১ সালে মুম্বাইয়ের মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জান্নাতের জন্ম। লেখাপড়ায় তিনি যথেষ্ট ভাল ছিলেন। মেধাবী জান্নাত অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন সমানতালে। দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় ৮১ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেন তিনি।
হিন্দি ধারাবাহিকের ব্যস্ত রুটিনের মাঝেও পড়াশোনা থমকে যেতে দেননি জান্নাত। বর্তমানে মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি কলেজ থেকে তিনি স্নাতক স্তরের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে অভিনয়কেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন।
মাত্র ৯ বছর বয়সে বিনোদন জগতে পা রেখেছিলেন জান্নাত। তার প্রথম কাজ ২০১০ সালে ‘দিল মিল গয়ে’ নামের একটি ধারাবাহিকে। সেখানে ক্যামিয়ো চরিত্রে দেখা গিয়েছিল জান্নাতকে। তার প্রথম অভিনীত সেই চরিত্রের নাম ছিল ‘তামান্না’।
২০১০-এই ‘কাশি অব না রহে তেরা কাগজ় কোরা’ ধারাবাহিকে কাজ করেন জান্নাত। ২০১১ সালে তাকে দেখা যায় ‘ফুলওয়া’-তে। এই দুই ধারাবাহিকে শিশুশিল্পী হিসাবে জান্নাতের অভিনয় নজর কেড়েছিল সকলের।
২০১৪ সালে জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ভারত কা বীর পুত্র— মহারানা প্রতাপ’-এ ফুল কানওয়ারের ছোটবেলার দৃশ্যে অভিনয়ের সুযোগ পান জান্নাত। তার পর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক ধারাবাহিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
নায়িকা হিসাবে জান্নাতের প্রথম ‘ব্রেক’ কালার্স টিভিতে। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘তু আশিকি’তে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। জান্নাতের বিপরীতে কাজ করেছেন ঋত্বিক অরোরা এবং রাহিল আজ়ম।
২০২২ সালে ‘খতরোঁ কে খিলাড়ি’-তে অন্যতম প্রতিযোগী ছিলেন হিন্দি টেলিভিশনের তরুণ তুর্কি জান্নাত। তিনি চতুর্থ স্থানে ওই প্রতিযোগিতা শেষ করেন। রিয়েলিটি শো-এর মাধ্যমে জান্নাতের জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায়।
জান্নাতের যাবতীয় সাফল্য ছোট পর্দায় প্রতিফলিত হলেও বড় পর্দায় তিনি একেবারে ব্রাত্য নন। ২০১৮ সালে বলিউডে কাজের সুযোগ পান তিনি। রানি মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘হিচকি’তে এক ছাত্রীর ভূমিকায় তাকে দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়া, বেশ কিছু পঞ্জাবি এবং হিন্দি ছবিতে কাজ করেছেন জান্নাত।
অভিনয় নিয়েই মেতে থাকেন জান্নাত। তবে তার উপরি পাওনা সমাজমাধ্যমের জনপ্রিয়তা। নিয়মিত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে বাড়তি রোজগার করেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে জান্নাতের অনুরাগীর সংখ্যা ৪ কোটি ৬০ লাখের বেশি।
জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে জান্নাতের চুক্তি রয়েছে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, ইনস্টাগ্রামে এক একটি পোস্ট থেকে তিনি প্রায় দেড় লক্ষ টাকা করে পেয়ে থাকেন। কোনও কোনও পোস্টে আয়ের পরিমাণ আরও বেশি।
মাত্র ২১ বছর বয়সে সাফল্যের শিখর ছুঁয়ে ফেলেছেন জান্নাত। বলিউডের সঙ্গে তার তেমন ওঠাবসা নেই। বাজিমাত করেছেন ছোটপর্দাতেই। প্রায় ১৩ বছর ধরে হিন্দি টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে কাজ করছেন তিনি।
এই ১৩ বছরে জান্নাত নিজের পরিশ্রমে সম্পত্তির পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে ফেলেছেন। বর্তমানে তিনি প্রায় ২৫ কোটি রুপির সম্পত্তির মালিক। প্রতি মাসে সব মিলিয়ে তার আয় হয় প্রায় ২৫ লাখ রুপি।