মঞ্চে মাতলামি করার জন্য বৃহস্পতিবার দশর্কদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। এদিন মদ্যপ অবস্থায় গান গাওয়ার জন্য মঞ্চে উঠেন তিনি। কিন্তু মঞ্চে উঠে মাতলামি ও অসংলগ্ন আচরণের কারণে নোবেলের দিকে জুতা ও বোতল ছুড়ে মারে দর্শকরা।
বৃহস্পতিবারের ঘটে যাওয়া এ ঘটনাটি চোখে পড়েছে নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদের। এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন তিনি।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে সালসাবিল লিখেছেন, ‘সকাল থেকে শুরু করে ডজনখানেক নিউজ। সমস্যাটা যদি শারীরিক হতো হয়তোবা মানুষ কমেন্টে দোয়ার মাহফিল বসাত। কিন্তু সমস্যাটা মানসিক তাও আবার মাদকঘটিত। যে রকম মানুষ নোবেল সে কোনো দিনই প্রথম থেকে এমন ছিল না। এটা আমার নিজেরই দীর্ঘদিনের দেখা। শো’য়ে যাওয়ার সময় গাড়ি দাঁড় করিয়ে নোবেলের নামাজ পড়া। সা রে গা মা পা চলাকালীন পুরো শুটিং ইউনিটকে বসিয়ে রেখে নামাজ পড়া আর সবার সঙ্গে অমায়িক ব্যবহার।’
‘সে মানুষটা এখন নিজের কার্যকলাপে নিজেই নিজেকে চিনতে পারে না। নিজের নিরহংকার রূপকে ঢেকে পরিবার ও ভক্তবৃন্দদের কাছে নিজের অস্বাভাবিক রূপ প্রকাশের দীর্ঘ প্রচেষ্টা,’ যোগ করেন তার পোস্টে।
এরআগে, বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছরপূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে গায়ক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় নোবেলকে।
আয়োজকদের তথ্যমতে, নোবেলের মঞ্চে উঠার কথা ছিল রাত ৯টায়। কিন্তু তিনি মঞ্চে উঠেন রাত ১১টার পর। তখন মদ্যপ ছিলেন নোবেল। গান গাওয়ার একপর্যায়ে নোবেল মাতলামি ও অসংলগ্ন আচরণ শুরু করেন।
আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা। নোবেলের এমন আচরণের ফলে তারা নোবেলকে লক্ষ্য করে জুতা ও পানির বোতল ছুড়ে মারতে থাকেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নোবেলকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে নেন আয়োজকরা।
২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর বিয়ে করেন নোবেল ও সালসাবিল। সেই খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায় ২০২০ সালের মে মাসে। যদিও বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো নয় নোবেলের। যার কারণে বর্তমানে তারা আলাদা থাকছেন। তবে তাদের ডিভোর্স হয়নি।
এরআগে, ঈদের দিন (২২ এপ্রিল) নোবেল তার স্ট্যাটাসে লিখেন একাকিত্বের সুর। ওই পোস্টে নোবেল লেখেন, ‘সিঙ্গেলদের আবার কীসের ঈদ? যাই হোক ঈদ মুবারক।’
বিবাহিত হয়েও নিজেকে সিঙ্গেল দাবি করায় তার স্ত্রী সালসাবিল এ বিষয়ে মুখ খুলেন। তিনি জানান, আমাদের এখনও আইনি বিচ্ছেদ হয়নি। তবে আলাদা থাকি।
তিনি আরও জানান, ২০২০ সালে বান্দরবানের একটি ঘটনার কারণে নোবেলকে বিবাহবিচ্ছেদের চিঠি পাঠিয়েছিলাম। ওই সময় সে নেশায় আসক্ত ছিল। পরে নোবেল ভুল স্বীকার করে এবং নেশা থেকে বিরত থাকে। পরে অবশ্য আবার নেশা শুরু করে। এ কারণে আমরা আলাদা থাকি। আমাদের আইনি বিচ্ছেদ এখনও হয়নি।
মাত্র ১ মাস আগে মার্চে স্ত্রীকে নিয়ে দুবাই ঘুরতে গিয়েছিলেন এ গায়ক। এরপরই নিজেকে এভাবে সিঙ্গেল দাবি করলেন নোবেল। এ প্রসঙ্গে স্ত্রীর উত্তর, সম্ভাবনা ছিল যে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। তাই একসঙ্গে দুবাই গিয়েছিলাম। কিন্তু ও এখনও নেশা ছাড়তে পারেনি। আর নেশা ছাড়তে না পারলে হয়তো এই সম্পর্ক বেশি দূর টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
অপ্রত্যাশিত ফেসবুক পোস্ট নোবেলের এবারই প্রথম নয়। এর আগেও এমন পোস্ট তিনি তার ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। কখনও নিজের সম্পর্ক নিয়ে, কখনও বিতর্কিত মন্তব্য করে, কখনও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলাদেশে বয়কটের ডাক দিয়ে, আবার কখনও নিজের মৃত্যু কামনা করতেও দেখা গেছে দুই বাংলার এ জনপ্রিয় গায়ককে।