বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে আপাতত ২৬টি গ্যাস ক্ষেত্রের ২০টি থেকে গ্যাস তোলা হচ্ছে। একাত্তর থেকে এ পর্যন্ত উত্তোলনের পরিমাণ ১৩.৪৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। ২৭.১২ ট্রিলিয়ন মজুতের মধ্যে এখনও পাওয়া যেতে পারে ১৩.৬৪। বছরে খরচ ৮০ হাজার কোটি ঘনফুট। শেষ হওয়ার সময় আসন্ন। আশার কথা একটাই, দুটো নতুন গ্যাস ফিল্ডের সন্ধান মিলেছে। একটি অগভীর সমুদ্রে ১১ নম্বর ব্লকে। অন্যটি ভোলার শাহবাজপুরে। গভীর সমুদ্রে ১২, ১৬, ২১ নম্বর ব্লকেও গ্যাস পাওয়া যেতে পারে।
কোনখানে কতটা পাওয়া যাবে ঠিক নেই। উত্তোলন পর্ব শুরু হতেও সময় লাগবে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানকে বাদ দেওয়া যায় না। এখনকার পরিস্থিতির ওপর দাঁড়িয়েই গ্যাস সমস্যার সমাধান চাই। দরকার বিকল্প ভাবনার। সেদিকেই চোখ রেখেছে বাংলাদেশ সরকার। ঘরে ঘরে আর গ্যাস লাইন দেওয়া হবে না। চালু হবে কলকাতার মতই এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ। সিএনজিতে গাড়ি চালানো বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। কাজটা সহজ নয়। পেট্রলের তুলনায় গ্যাস অনেক সস্তা। সরকার চাইছে, পেট্রলের দাম কমিয়ে সিএনজির মূল্যবৃদ্ধি। দু’য়ের দরের তফাৎ এতটাই, বাড়িয়ে কমিয়ে সামঞ্জস্য আনা কঠিন।
দেশের অধিকাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্যাস নির্ভর। গ্যাস পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বজায় আর সম্ভব নয়। ভারতের রিলায়েন্স সংস্থা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী। তারা বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। তার ওপর ভিত্তি করেই সমীক্ষা শুরু। কয়লা বা জলবিদ্যুতের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তাতে খরচ বাড়লেও গ্যাস বাঁচাতে সেটা দরকার।
বাংলাদেশে চলে প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিএনজি। যাকে বলা হয় কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস। তার পরিবর্তে ভারতের মতো এলপিজি বা লিক্যুফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলা আর যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ খোঁজ চালাচ্ছে নতুন গ্যাস ভাণ্ডারের। নরওয়ের সংস্থার সঙ্গেও পেট্রো বাংলার হাইড্রোকার্বন ইউনিট জরিপে ব্যস্ত। তারা কিছু পকেটে গ্যাস পাওয়ার আশা করছে। সেটা পেলে আঞ্চলিক কলকারখানাতে গ্যাস সরবরাহ করা যেতে পারে।
বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বরিশাল আর খুলনার দিকে। গ্যাসের অভাবে সেখানে কারখানাগুলো ধুঁকছে। এবার গ্যাস সরবরাহ বাড়বে। বাড়িতেও গ্যাস লাইন দেওয়া হচ্ছে। বিকল্প জ্বালানির খোঁজের সঙ্গে গ্যাসের সঞ্চয় বাড়ান জরুরি। তাতে আচমকা সংকটে পড়ার শঙ্কা থাকে না।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা