নিজস্ব প্রতিবেদক: চর দখলকে দখলকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার মামলায় পরিকল্পিতভাবে চাঁদপুরের মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার ছেলে কাজী জাফর রহমান।
রবিবার (২৫ জুন) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, এখন আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছি।
সাংবাদিক সম্মেলনে কাজী জাফর রহমান জানান, তার বাবা একজন শিল্পপতি ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সাবেক সদস্য। বিগত ২০১৮ সালে নৌকার পক্ষে কাজ করায় মনোনয়নবঞ্চিত একজন নেতা আমাদের পরিবারকে হামলা মামলাসহ নানাভাবে হয়রানী করছে। তিনি বলেন, বিগত ১৬ মার্চ উপনির্বাচনে মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আমার বাবা কাজী মিজান। এরপর থেকে আমাদের ইউনিয়নেরই বাসিন্দা আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার অপচেষ্টা করে আসছেন। গত ১৭ জুন মোহনপুরের বাহাদুরপুর এলাকায় চর দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কালু ও রাজ্জাক গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মোবারক হোসেন বাবু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এই ঘটনায় কাজী মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ৩১ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মামলায় কাজী মিজানের দুই ভাই কাজী আব্দুল মতিন ও কাজী হাবিবুর রহমানকেও দুই ও তিন নম্বর আসামী করা হয়েছে। বাবুর ভাই আমির হোসেন কালুর করা এজহারে বলা হয়েছে; কাজী মিজান ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তার ভাই হাবীব ও মতিনকে গুলি করার নির্দেশ দেন। মতিন প্রথমে ও পরে হাবীব গুলি করেন।
জাফর রহমান আরো বলেন, এজহার অনুযায়ী ঘটনাটি ঘটেছে বেলা ৩ টায়। ওই সময় আমার বাবা ও দুই চাচা বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। তার সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের কাজে সংরক্ষিত ছিল। আমাদের বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে দুর্গম চরে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সেখান থেকে কোনোভাবেই এক থেকে দেড় ঘণ্টার আগে আমাদের বাড়িতে আসা সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষে আমার বাবা, দুই চাচা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে। আমরা এই মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। আমার চাই প্রকৃত অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। এই অপরাধে যুক্ত না থাকায় আমার বাবা ও দুই চাচাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে মুক্তি দেওয়া হোক।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন কাজী মিজানের পুত্রবধূ সিফাত নুসরাত। বক্তব্য রাখেন কাজী মিজানের স্ত্রী রাজিয়া বেগম, কাজী হাবিবের স্ত্রী ও চাঁদপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা বেগম। উপস্থিত ছিলেন মিজানের বোন নাসিমা বেগম, মোহনপুর ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার জেসমিন বেগম।
রাজিয়া বেগম বলেন, আমার বিয়ের পর থেকেই আমি দেখেছি আমার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। নৌকা যার পক্ষে থাকে তিনিও তার পক্ষে কাজ করেন। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আমাদের এলাকার একজন প্রভাবশালী নেতা দলীয় মনোনয়ন পাননি। তিনি আমার স্বামীকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে বাধা দেন। ওই বাধা উপেক্ষা করে নৌকার পক্ষে কাজ করায় আমার স্বামীকে নানাভাবে হয়রানী, মামলা ও হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। তাকে রাজাকার ও বিএনপি-জামায়াতের লোক বলেও অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এসব বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন