বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৯তম জন্মদিন আজ।
১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় আরও তিন নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মনসুর আলী ও আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদকে হত্যা করা হয়।
ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি ঘটে তাজউদ্দীন আহমদের। ১৯৪৩ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হওয়ার পরের বছরই ১৯৪৪ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগে যোগদান করেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত সংগঠনটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি।
১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন তাজউদ্দিন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে যান এবং প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করেন তাজউদ্দীন। ৪ এপ্রিল দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাজউদ্দীনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। ১০ এপ্রিল তিনি আগরতলায় সরকার গঠন করার উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধকে সফল সমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে তার অবদান ছিলো অসামান্য।
মহান এই নেতার জন্মদিন উপলক্ষে তার নিজ এলাকা গাজীপুরের কাপাসিয়ায় প্রশাসন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নানা আয়োজন করেছে। সকালে তাজউদ্দীন আহমেদের মুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর দলীয় কার্যালয়ে কেক কাটা হবে, বিকেলে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাজউদ্দীন আহমদের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা, পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিকেল ৩ টায় যুবলীগের র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ সদস্য তাজউদ্দীন কন্যা সিমিন হোসেন রিমি বলেন, বাবার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলাদা কোন পরিকল্পনা নেই। প্রতিবারের মতোই এতিম শিশু, বিধবাদের কিছু সহযোগিতা করা হবে।