অধ্যাপক তাহের হত্যা, দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর আজ রাতেই!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক তাহের আহমেদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির স্বজনদের সাক্ষাতের জন্য ডেকেছে কারা কর্তৃপক্ষ। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ফাঁসি কার্যকর হতে পারে আজ রাতে। রাজশাহী কারাগারে এ ধরনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় পরিবারের সদস্যদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। আর কারাগারের ভেতরে চলছে কর্মকর্তাদের বৈঠক। কারা সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় যে কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা তারা এ বৈঠকে আছেন।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার আব্দুল জলিল কোনো কথা বলতে চাননি। রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল একটি সভায় আছেন জানিয়ে মুঠো ফোনে বলেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। আপাতত কিছু জানাতে পারছি না।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মো. ফারুক বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। বিষয়টি নিয়ে তিনি কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই কথা বলার পরামর্শ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে ড. এস তাহের হত্যা মামলায় চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জাহাঙ্গীরের আটকের বৈধতা নিয়ে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাবের করা রিটের শুনানি শেষে গত ১৭ জুলাই বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট খারিজ করে আদেশ দেন। পরে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত চাওয়া হয়। সেই আবেদন আজ খারিজ করে দেওয়া হলো।

মঙ্গলবার দুপুরে ফাঁসির আসামি জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করতে আসেন তার ভাই মিজানুর রহমান। কারাগারের সামনে তিনি জানান, গত রোববারই তাদের চিঠি দিয়ে সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়েছে। রিট খারিজের পর আজ তারা এসেছেন। যারা সাক্ষাৎ করবেন তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নেওয়া হয়েছে। এখন বাইরে অপেক্ষা করছেন। ডাক পড়লে ভেতরে গিয়ে সাক্ষাত করবেন।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের আহমেদ। ২ ফেব্রুয়ারি তাঁর লাশ বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। এই হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন।

পরে দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন।

তবে আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন। ইতোমধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছেন রাষ্ট্রপতি।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts