প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের যে কোমলমতি শিক্ষার্থী তারাই হবে আগামী দিনের দক্ষ কারিগর। যারা এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা পথ তৈরি করে দিয়ে গেলাম। আগামীতে পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়মতো প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) গণভবনে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবথেকে বেশি দরকার এখন শিক্ষার গুণগত মান আরও উন্নত করা এবং সারাবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা চলতে পারে, সে ব্যবস্থা নেওয়া। তবে এটা আমি বলতে পারি সারাবিশ্বের অনেক ছেলেমেয়ের সঙ্গে তো আমাদের পরিচয় হয়। তবে আমাদের ছেলেমেয়েরা কিন্তু যথেষ্ট মেধাবী এবং বাঙালি ছেলেমেয়ে পৃথিবীর যেখানে যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে তারা কিন্তু অভূতপূর্ব একটা ফলাফল দিতে পারে । কাজেই নিজেদের দেশেও আমাদের ছেলেমেয়েদের আমি যেটা দেখি যারা পড়াশোনা করছে তারা সত্যি অত্যন্ত মেধাবী।
আমরা মনে করি যে বিশ্ব সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে। আমাদের শিক্ষার কার্যক্রম আমরা যেভাবে চালিয়ে যাচ্ছি বলে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে লক্ষ্য রেখে আগামী দিনে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এরাই তো হবে আগামী দিনে আমাদের ২০৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশের কারিগর। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে নিজেদের দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশটা আজকে যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে সেই দেশটাকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে তোলার সব প্রস্তুতিটা এখন থেকে করে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আর আমাদের আজকের যে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তারাই হবে আগামী দিনের দক্ষ কারিগর। যারা এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা পথ তৈরি করে দিয়ে গেলাম। প্রযুক্তি পরিবর্তনশীল; কাজেই সে পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়মতো প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা কৃতকার্য হতে পারেনি, মনে দুঃখ নেওয়ার কোন কিছু নেই। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করলে তারা আবার ভাল রেজাল্ট করতে পারবে। একটু পিছিয়ে পড়লেও ক্ষতি নাই।
তিনি বলেন, আগামীতে যেন ভালোভাবে পাস করা যায়, সেভাবে তারা প্রস্তুত হবে- সেটাই আমি আশা করি। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করলেই ভালো রেজাল্ট করতে পারবে।
অকৃতকার্যদের বকাবকি না করে তাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অভিভাবকদের বলব ছেলেমেয়েরা ফেল করেছে বলে বকাবকি করবেন না কখনও। তাদের আরও আদর দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করান। সেই পথেই যাবেন। অযথা ওমুকের ছেলে এই ভালো রেজাল্ট করলো আর তুমি পারলা না কেন? এই তুলনাটা যেন না করেন; এটা করা ঠিক না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা অকৃতকার্য হয়েছে তাদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হয়ে, আগামীতে যেন পড়াশোনায় মনোযোগ দেয় সেটি অভিভাবকরা বিশেষভাবে দেখবেন। শিক্ষকদের বলব তাদের প্রতি আরও মনোযোগী হন, সেজন্য ভবিষ্যতে যেন তারা কৃতকার্য হয়।
সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন এবং ফল প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালের সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), দাখিল, এসএসসি ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষার ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন। ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সার্বিক পরিসংখ্যান তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) উপস্থিত ছিলেন।
এরপর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরা তাদের নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফলের পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।