রক্তপাতেই শেষ হলো ৬ ধাপের ইউপি নির্বাচন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক অনিয়ম, সহিংসতায় প্রাণহানির মধ্য দিয়ে চলে আসা নবম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের শেষ পর্বের ভোটও শেষ হয়েছে প্রায় একইভাবে।

শনিবার সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয় ৬৯৮টি ইউপিতে। এসময় সহিংসতায় ফেনীর সোনাগাজী, নোয়াখালী সদর ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ভোটের সহিংসতায় আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে আর কয়েক জেলায়।

ভোট দিতে বাধা প্রদান, ব্যালট ছিনতাই ও হুমকিসহ নানা অভিযোগে ঝিনাইদহের শৈলকুপা, ঢাকার সাভার, মাদারীপুরের শিবচর এবং নড়াইলের লোহাগড়ায় ১০ চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে এই ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শতাধিক লোকের প্রাণহানি ঘটে। তার মধ্যে পাঁচ ধাপের ভোটের দিন মারা যান অন্তত ৩৫ জন; বাকিরা ভোটের আগে-পরের সহিংসতায়।

এসময় সংঘর্ষ-হামলায় সহস্রাধিক লোক আহত হন। অনিয়মের কারণে প্রায় তিনশ’ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে নর্িাচন কমিশন (ইসি)।

প্রথমবারের মতো দলভিত্তিক স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দেড় ডজন দল অংশ নিলেও মূল লড়াই হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা নবম সংদের বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে। অনিয়ম-সহিংসতায় পরস্পরকে দোষারোপও করছে দল দুটো।

শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ শুরুর তিন ঘণ্টা পর বিএনপির পক্ষ থেকে কুমিল্লা, বরিশাল, পিরোজপুর, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও শরীয়তপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নের চিত্র তুলে ধরে অভিযোগ করা হয়, এবারও ভোটকেন্দ্র দখলের মহোৎসব চলছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন, ইউপি নির্বাচন ‘কিছু বিছিন্ন ঘটনা’ ছাড়া সুষ্ঠু হয়েছে। বিএনপি এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অংশ নিয়েছে।

পঞ্চম ধাপে ভোটের সময় দুজনের প্রাণহানি ঘটলেও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ১০ জনের বেশি নিহত হন।
এমন পরিস্থিতিতে শেষ ধাপে অনিয়ম-গোলযোগ রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা’ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে ইসি। ইসির ‘কঠোর বার্তায়’ শেষ পর্বে ‘ভালো’ ভোটের ‘আশায়’ পর্যবেক্ষক মহলও।

ষষ্ঠ ধাপে ৪৬ জেলার ৯২ উপজেলার ৬৯৮ ইউপিতে ভোট হয়েছে। এতে ভোটার ছিল ১ কোটি ১০ লাখের বেশি। ভোটকেন্দ্র ছয় হাজার ২৮৭টি।

চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ২২৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৫ হাজার এবং সংরক্ষিত পদে ৫ হাজারের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ২৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

চট্টগ্রামে মিরসরাইয়ের করেরহাট ও কুমিল্লার মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর ইউপির সব পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রার্থীরা।

এক লাখের বেশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেড় লাখের মতো সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন ভোটের দায়িত্বে। এর আগের পাঁচ ধাপে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থীরা ২২৬৭ ইউপিতে ও ধানের শীষের প্রার্থীরা ৩১০ ইউপিতে জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন ৬৯৬ জন।

ইসির হিসাবে প্রথম ধাপে ৭৪ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ শতাংশ, তৃতীয় ধাপে ৭৬ শতাংশ, চতুর্থ ধাপে ৭৭ শতাংশ ও পঞ্চম ধাপে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts