আলোচিত-সমালোচিত আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকবার অংশ নিয়ে হেরে গেলেও এই ইউটিউবার সমর্থন পেয়েছেন এলাকার প্রান্তিক মানুষের।
সমর্থকরা বলছেন, সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগে যোগ দেওয়ায় নিজ জেলা বগুড়ায় তার সমর্থনে ভাটা পড়েছে। তবে তিনি স্বতন্ত্র থেকেই নির্বাচন করতে পারেন বলে জানিয়েছেন।
বিএনপির ছেড়ে দেওয়া বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েও সবার নজর কেড়েছিলেন হিরো আলম। গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে হিরো আলম মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তিনি অভিযোগ করেন, কৌশলে তাঁকে পরাজিত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সমর্থকরাও তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে সহমর্মিতা জানান। ভোটের ক্যাম্পিং, পোস্টার-লিফলেটসহ অনেক খরচেরও জোগান দেন তারা।
ভোটের পর নির্বাচনী এলাকায় গেলে মানুষ তাকে ঘিরে ধরত। তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে মরিয়া ওয়ে উঠত। অনেকেই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাকে জোর করে খাইয়ে আপ্যায়ন করত। গত ১২ সেপ্টেম্বর হিরো আলম আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে পরিচিত মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগে যোগ দেন। তাকে সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক করা হয়। ওই দিনই তিনি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান। এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে– হিরো আলম আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। এরপর এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে তাকে নিয়ে মাতামাতি কমেছে।
সবশেষ গত ১৭ অক্টোবর হিরো আলম বগুড়ায় এসে দু’দিন থেকে আবার ঢাকায় ফিরে গেছেন। আগে এলে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুটে আসত। কিন্তু এবার তেমনটি হয়নি। হিরো আলমের বাল্যবন্ধু বগুড়ার হোসেন আলী বলেন, ‘ভোটে পরাজিত হলেও তার সমর্থন কিন্তু বাড়তে থাকে। আগের মতো স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করলে হয়তো একদিন না একদিন সে জয়ী হতে পারত। এখন সে পথ বন্ধ হয়ে গেছে।’
হিরো আলম বলেন, ‘একাধিকবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছি। আবারও নির্বাচন করব। কোন প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করব তা ঠিক করিনি। শেষ পর্যন্ত হয়তো স্বতন্ত্র থেকেই নির্বাচন করতে পারি।’
মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগে যোগ দেওয়ায় তাঁর সমর্থন কমে গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো দলে যোগ দিইনি। এটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়। সময় হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’