বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (২৯ অক্টােবর) সকালে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।
রবিবার ভোর রাত থেকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারে বাসায় বাসায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। সকাল সাড়ে নয়টায় গুলশানের বাসভবন থেকে আটক করা হয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।
মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম বলেন, ‘সকালে ডিবি পুলিশের লোকজন বাসায় আসে, মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বাসার সবার সঙ্গে কথা বলে। এরপর বাসা এবং ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, হার্ড ডিস্ক নিয়ে চলে যায়। ঠিক ১০ মিনিট পর আবার ফিরে এসে আটক করে নিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল প্রচণ্ড অসুস্থ, তার চিকিৎসা চলছিল। এভাবে নিয়ে যাবে মেনে নিতে পারছি না। ৭৫ বছর বয়স্ক মানুষ। আশা করবো, যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তা করে যেন তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিএনপি নেতারা যখন মিটিং করেছেন তখনই পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। এসব হামলার দায় দলটির নেতারা এড়াতে পারেন না। এজন্যই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শনিবার বিএনপির সমাবেশস্থলে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় তাদের দলের মহাসচিবকে আটক করা হয়েছে। সহিংসতায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আটক করার জন্য তার বাসা ভোর চারটায় ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভোর ৬টায় তার বাসার ভিতর অভিযান চালালে তাকে বাসায় পাওয়া যায়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মির্জা আব্বাসের বাসা পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে।
ভোর পাঁচটার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করার জন্য তার গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। আমীর খসরু বাসায় না থাকায় তাকে আটক করতে পারেনি।
সকাল ৮টা থেকে পুলিশ ঘিরে রেখেছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের লালমাটিয়াস্থ বাসভবন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সাড়ে এগারটায় তার বাসভবনে প্রবেশ করে পুলিশ। তবে একটি সূত্র জানায়, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাসায় নেই।
এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের শান্তিনগরের বাসভবন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পল্লবীর বাসভবন এবং যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর বাসভবনে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
সবশেষ বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের গুলশান-১ নম্বরের ১২২ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়িতে গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, শনিবার সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে একজন যুবদল কর্মী ও একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এ ঘটনায় রবিবার সারা দেশে হরতাল ডাকে বিএনপি ।