রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) হিজরি শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে। সেই হিসাবে ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) শবে বরাত পালিত হবে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার।
শবে বরাতের পরদিন বাংলাদেশে নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি। এবার এ ছুটি পড়ছে ২৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার)।
শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরি শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পালিত মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতকে ভাগ্যরজনী বলা হয়ে থাকে। এই রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের বিশেষভাবে ক্ষমা করেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুসলমানরা শবে বরাতে মহান আল্লাহ ও তার প্রিয় হাবিবের সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য নফল রোজা, দান সদকা ও এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন।
মহিমান্বিত এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময়ের অনুগ্রহ লাভের আশায় বেশি বেশি নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকিরে মগ্ন থাকেন। অনেকে রোজা রাখেন, দান-খয়রাত করেন। অতীতের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন।
এই রাতের তেরটি নাম রয়েছে। নামের আধিক্য এর মাহাত্ম্য প্রমাণ করে। বারাআত থেকে বরাত। বারাআত অর্থ মুক্তি। আল্লাহ তা’আলা এ রাতে ইমানদার বান্দাদেরকে গুনাহ থেকে মুক্ত করেন। এছাড়া এ রাতকে দোয়ার রাত, ভাগ্যরজনী, বরকতময় রাত, নিসুফু শাবান, শাবান মাসের মধ্যরজনী, শাফাআতের রাত, ক্ষমার রাত, জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত, জীবন রাত্রি, তকদিরের রাত ও অন্য আরও অনেক নামে ভূষিত করা হয়েছে।
উপমহাদেশে শবে বরাত নামেই পরিচিতি পেয়েছে এই মহিমান্বিত রজনী। কোরআন হাদিসের ভাষ্য অনুসারে শবে কদর বছরের শ্রেষ্ঠ রাত। কিন্তু শবে কদর নির্দিষ্ট নয়। রাসূল সা. শবে কদরের রাত সম্পর্কে জানাতে হুজরা থেকে রেব হয়েছিলেন। সেসময় দুজন লোককে ঝগড়া করতে দেখে নবীজী সা.শবে কদরের তারিখ ভুলে গেলেন। এরপর নবীজী সা. বললেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকে শবে কদর তালাশ করো। শবে কদর অনির্দিষ্ট হওয়ার ফলে শবে বরাত মুসলিম উম্মাহর কাছে অধিক গুরুত্ব পেয়ে এসেছে। শবে কদর একদিকে অনির্দিষ্ট, অন্যদিকে শবে কদর রমজান মাসে হওয়ায় এটাকে কেন্দ্র করে খুব উৎসবমুখর থাকা যায় না। কারণ রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে রাতে তারাবি আদায় করতে হয়, আবার ভোরে উঠে সেহরির চিন্তা করতে হয়। এসব কারণে শবে কদরকে কেন্দ্র করে শবে বরাতের মতো জমকালো আনুষ্ঠানিকতার ধারা গড়ে ওঠেনি।
শবে বরাতের ১৫ দিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আনন্দ বার্তা নিয়ে শুরু হয় সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান।