হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, জাপানি তিন শিশুর মধ্যে দুজন তার মা ও একজন বাবার কাছে থাকবে। ইমরান শরীফ ও নাকানো এরিকো দম্পতির বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা ও ছোট মেয়ে সোনিয়া তাদের জাপানি মায়ের কাছে থাকবে। মেজ মেয়ে লাইলা লিনা তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরিফের কাছে থাকবে।
রায়ে বলা হয়েছে, প্রথম ও তৃতীয় মেয়েকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে বা যেকোনো দেশে বসবাস করতে পারবেন। তবে বাবা সন্তানদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন। একইভাবে দ্বিতীয় মেয়ে লাইলা লিনা ইমরান শরিফের কাছে থাকবেন। তবে জাপানি মা দ্বিতীয় মেয়ের সঙ্গে দেখার সুযোগ পাবেন।
এ বিষয়ে আপিল আংশিক মঞ্জুর করে মঙ্গলবার বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে ইমরান শরিফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম, ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, অ্যাডভোকেট নাসিমা আক্তার লাভলী। নাকানো এরিকোর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি আইন অনুসারে বিয়ে করেন নাকানো এরিকো ও শরীফ ইমরান। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তাদের তিনটি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে।
তারা হলো- জেসমিন মালিকা (১১), লাইলা লিনা (১০) এবং সানিয়া হেনা (৭)। এই তিনজন টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসজেআই) শিক্ষার্থী ছিল। আর মা এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করেন।
আদালতের রায় অমান্য করে জাপানি মা নাকানো এরিকোও দ্বিতীয়বারের মতো তার বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি রাতে বাংলাদেশ ত্যাগের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাদের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। এ ঘটনার পর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গুলশান থানা থেকে মেজো মেয়ে লায়লাকে তার মা নিতে চাইলে সে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। একপর্যায়ে সে টেবিলের নিচে গিয়ে লুকায়। পড়ে মা বড় মেয়েকে নিয়ে থানা ত্যাগ করেন।