রাজধানীর গুলশানে পুলিশের গুলিতে পুলিশেরই আরেক সদস্য নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পথচারী জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) রাত ১২ টার দিকে গুলশানে ঢাকাস্থ ফিলিস্তিনী দূতাবাসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কনস্টেবলের নাম মো. মনিরুল। তাকে গুলি করেন কনস্টেবল কাউসার আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন গণমাধ্যমকর্মী হাসান আহমেদ বলেন, আমরা ডিউটি শেষ করে অফিসের গাড়িতে ফিরছিলাম। হঠাৎ ফিলিস্তিনী দূতাবাসের সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পুলিশের এক সদস্যকে পড়ে থাকতে দেখি। এতে আমাদের চালক গাড়ির গতি থামাতেই পুলিশের একজন সদস্য এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময়ও বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পাই। তবে কি নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে, তা তাৎক্ষণিক বুঝতে পারিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফিলিস্তিন দূতাবাসের এক নিরাপত্তা রক্ষী বলেন, ঘটনার সময় আমরা দূতাবাসের ভিতরে ছিলাম। হঠাৎ করে রাত ১১ টা ৫০ মিনিটের দিকে ৭ থেকে ৮ রাউন্ড গুলি শব্দ শুনে আমরা বাহিরে আসি। বাইরে আসার পর কাউসার কে দেখি ফিলিস্তিনি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটু দূরেই পড়ে রয়েছে মনিরুলের মরদেহ। তখন আমরা কাউসারকে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে। তখন সে বলে শালা (মনিরুল) নাটক করতেছে এমনি মাটিতে পড়ে রয়েছে।
এই কথা বলে কাউসার দূতাবাসের বিপরীত পাশে রোডে চলে যায়।এরই মধ্যে সবাই বুঝে উঠে যে কাউসার মনিরুলকে গুলি করেছে। এর পরপরই ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা কাউসারকে আটক করে।
এদিকে পুলিশ কনস্টেবল কাওসার আহমেদের গুলিতে নিহত আরেক কনস্টেবল মনিরুল হককের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গেই পড়ে আছে মরদেহ। রোববার বিকাল ৪টা পর্যন্ত নিহত মনিরুল হককের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার রিফাত রহমান শামীম।পুলিশ জানায়, ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত করতে চাচ্ছেন না। এ জন্য এখনও ময়নাতদন্ত হয়নি।
জানা গেছে, বারিধারায় কূটনীতিক এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হককে খুব কাছ থেকে গুলি করেন আরেক কনস্টেবল কাওসার আহমেদ। গুলি করার সময় তার অস্ত্রের একটা ম্যাগাজিন খালি হয়ে গেলে আরেকটি ম্যাগাজিন লাগিয়ে গুলি করেন।
পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনস্টেবল কাওসার আহমেদ সাব মেশিনগান দিয়ে দুটি ম্যাগাজিনের ৩৪ রাউন্ড গুলি চালান। কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের দেহ তাতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, কনস্টেবল কাওসার সাব মেশিনগান এসএমটি-৯ দিয়ে কনস্টেবল মনিরুলের দেহে গুলি করেন। গুলি করার সময় তার অস্ত্রের একটা ম্যাগাজিন খালি হয়ে গেলে আরেকটি ম্যাগাজিন লাগিয়ে গুলি করেন।