সুবর্ণচরে মাথায় হাত রেখে প্রতিশ্রুতি দিলেন বিএনপি মহাসচিব

দল ও জোটের শরিক নেতাদের নিয়ে শনিবার সকালে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে নোয়াখালীতে যান বিএনপি মহাসচিব। তিনি প্রথমেই যান নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে; সুবর্ণচরের চরজুবলী ইউনিয়নে ধর্ষণের শিকার চল্লিশোর্ধ্ব ওই নারী হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন।

ফখরুল ওই নারীর মাথায় হাত বুলিয়ে আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “বোন আমরা তোমার পাশে আছি। তোমার কোনো ভয় নেই। এই নির্মমতার অবশ্যই একদিন বিচার হবে। আল্লাহ বিচার করবেন।”

ধর্ষিত নারীকে সান্ত্বনা জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপি মহাসচিবকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন ওই নারীর অটোচালক স্বামীও। এ সময়ে তার পাশে থাকা ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানসহ অন্য নেতারাও ছিলেন অশ্রুসজল।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকীও ওই নারীকে মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেন।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর রাতে নিজের বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হন বাগ্যা গ্রামের এই নারী। স্বামী ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে বেঁধে রেখে তাকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার সহচররা দলবেঁধে ধর্ষণ করে বলে এই নারীর অভিযোগ।

ওই নারীর অভিযোগ, ভোটকেন্দ্রে নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জের ধরে তার উপর এই নির্যাতন চালানো হয়।

বাংলাদেশে নির্বাচনের পর বিরোধী সমর্থকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অতীতেও দেখা গেছে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ভোটে জেতার পর ব্যাপক নির্যাতন হয়েছিল হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তার তদন্তে গঠিত একটি কমিশন ওই ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতের অনেক নেতার সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা জানিয়েছিল।

এবার নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এই নারীর ধর্ষণের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা উঠেছে। মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল ও পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নোয়াখালী গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

অভিযোগের মুখে থাকা সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। ওই নারীর স্বামীর করা মামলায় ইতোমধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিএনপি মহাসচিব, আ স ম রব ও কাদের সিদ্দিকী ওই নারীর চিকিৎসার খোঁজ খবর নেওয়ার পর তাকে অর্থ সহায়তা দেন।

Print Friendly

Related Posts