সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল : ফখরুল

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ঐক্যফ্রন্টের সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল এবং তারেক রহমানের নির্দেশে নির্বাচনের ১২০ দিন পর এমপিদের শপথ গ্রহণ সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে আমরা অতীতে বলেছিলাম, আমরা (সংসদে) যাবো না। ওই মুহূর্তে সেই সিদ্ধান্ত আমাদের (বিএনপির) সঠিক ছিল না। গতকাল রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত ছাত্রফোরাম আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর চতুর্থ শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘বিচার বিভাগসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে আইন ও বিচারব্যবস্থা না থাকায় আমাদের জন্য কাজ করা খুবই কঠিন। কিন্তু আমরা সে জন্য ছেড়ে দেব, বসে থাকব এমনটা না। আমরা অবশ্যই পথ খুঁজব। আমাদের পার্লামেন্টেও লড়াই করতে হবে। বাইরেও লড়াই করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে রাজনীতিতে স্থির বলতে কিছু নেই। স্থিরভাবে কোনো কিছু থাকে না। এটা সবসময় পরিবর্তন হতে থাকে। ৯০-এর যে চিন্তা-ভাবনা, পরিস্থিতি, পরিবেশ সেগুলো কি ২০১৯ সালে আছে? সুতরাং আমাদেরকে ২০১৯ সালের রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করে, পর্যবেক্ষণ করে তার পথ বের করতে হবে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু সস্তা শ্লোগান দিয়ে কথা বললে চলবে না। আমাদের দুই দিকেই লড়াইটা করতে হবে। সংসদের ভেতরে থেকেও কথা বলতে হবে এবং বাইরে থেকেও কথা বলতে হবে। এটা বলতে আমার কোনও দ্বিধা নেই। লড়াইটা করতে হবে। আপনাকে সব জায়গা থেকে লড়াই করতে হবে। সংগ্রাম করতে হবে। এজন্য পথ তৈরি করে দিতে হবে।

কারাগারের ভেতরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হলে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, আমাদের দলের নেতাদের বলবো যা বলার দলীয় ফোরামে বলবেন। বাইরে দলের বিষয়ে যত কম কথা বলবেন, তত মঙ্গলজনক হবে। তবে আমাদের দল ঐক্যবদ্ধ আছে। কোনও সমস্যা নেই।

তিনি আরো বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক শক্তি নয়। আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু তার উল্টোটা বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ একমাত্র দল, যারা ’৭৫ সালে সব দল নিষিদ্ধ এবং পত্রিকাগুলো বন্ধ করে দিয়ে একদলীয় শাসন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখন আবারও সেই দল দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের অধিকারগুলো হরণ করে নিয়েছে। মানুষের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন করছে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ বিচার ব্যবস্থা, আইন এবং নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করা হয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তারা বলে দেন কারা কথা বলবেন, কারা কথা বলবেন না। কোন খবর পত্রিকায় আসবে, কোনটা আসবে না। সুতরাং, এখানে গণতন্ত্র কাজ করতে পারে না। নাসির উদ্দিন পিন্টুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, পিন্টু এমনি মারা যাননি, তাকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতাবে বিনা চিকিৎসায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লা প্রমুখ।

Print Friendly

Related Posts