হার্টের অসুখ মানে মৃত্যু নয়

মোহাম্মদ জ.ই.বুলবুল

bulচিকিৎসা বিজ্ঞানের যথেষ্ট উন্নতি সত্বেও পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে হার্ট অ্যাটাকেই। তবে এ রোগে মৃত্যু মোটেও অবধারিত নয়। এটি বলেছেন চিকিৎসকরা জার্মানির হামবুর্গ শহরের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. টোমাস স্টাইন বলেন, একটু সচেতন হলেই এ রোগটি থেকে দুরে রাখা সম্ভব অর্থাৎ হার্ট আটাক কোনো কখনো কারন ছাড়া কখনো হঠাৎ করেই হয় না। স্বাস্থ্য বিষয়ক দিন গুলোর মধ্যে অন্যতম বড়দিন হলো বিশ্ব হার্ট দিবস। প্রতিবছর ১৯ সেপ্টেম্বর হাট বিশ্ব হার্ট দিবস পালিত হয়।

যেসব কারণে হয়, তা হলো-

পেশাগত চাপ: প্রতিযোগীতার এ যুগে যারা কর্মক্ষেত্রে চাপের মধ্যে থাকেন, তাদের হার্ট আ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজন সুস্থ পরিবেশ। দ্ব›দ্ব- বিবাদ নয়, অফিসে থাকতে হবে শান্ত পরিবেশে। এটি বলেছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।

আগে থেকে বোঝা যায় না: অনেকের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক হয় আকস্মিকভাবে আগে থেকে কিছুই বোঝা যায় না বা বোঝার উপায়ও থাকে না। কারও কারও ক্ষেত্রে আগের দিন বা কয়েক ঘন্টা আগে শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেমন- বুকব্যথা হওয়া, আবার কারও মনে হয় দম বা নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।

হাট অ্যাটাকের লক্ষন: টানা ৫ মিটিনের বেশি বুকের খাঁচা এবং পেটের উপরে দিকে ব্যথা ও বনি হয়। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ টোমাস বলেন, হার্ট অ্যাটাক মারা যাওয়ার সময় অনেক রোগীই বলেন- আর সহ্য করতে পারছি না, বুকে প্রচন্ড ব্যথা।

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি: অতিরিক্ত ওজন, উচ্চরক্তচাপ, ধুমপান, মদ্যপান, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ, কম হাটাচলা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। এছাড়া বংশগত কারনেও হৃদরোগ বা স্ট্রেস হতে পারে।

যেভাবে সম্ভব হৃদরোগ ঝুকি কমানো: বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুকিগুলো থেকে সাবধান থাকলেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি কমানো সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার, মাংশ থেকে দুরে থাকো। ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রন রাখতে নিয়মিত হাটাচলা বা ব্যায়াম করা উচিত। জীবনযাত্রার মান অনেক ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি কমিয়ে দিতে সক্ষম।

হার্ট অ্যাটাক মৃত্যু নয়: হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা গেলে রোগীকে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হলে রোগীর জীবন রক্ষা করা সম্ভব।

স্ট্রেস এড়িয়ে চলুন: পেশাগত দায়িত্ব, পরিবার, সন্তান ও অন্য সবকিছু মিলিয়ে আজকের যান্ত্রিক জীবনে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি বাড়াতে বড় ভুমিকা পালন করে। তাই এ থেকে বেরিয়ে আসতে হাঁটাহাঁটি, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাটতে হবে। ৪০ বৎসর বয়সের পর নিয়মিত পরীক্ষা করে ডায়াবেটিকস উক্ত রক্তচাপ, রক্তে উচ্চ মাত্রার কোলেষ্ট্রোরেল আছে কিনা, তা দেখতে হবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিয়ে নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। তাছাড়াও নিয়মিত নামাজ, খেলাধুলা, নাচ, গান, বাগান করা বা অন্য এমন কিছু বেছে নিন- যাতে সপ্তাহে অন্তত দুদিন আরাম -আয়েশে কাটাতে পারেন।

লেখক: সাংবাদিক, স্বাস্থ্য বিষয়ক নিবন্ধকার
bulbulbd12@yahoo.com

Print Friendly

Related Posts